পশ্চিমবঙ্গের মানুষ রাজনৈতিক সার্কাসের শিকার

আমাদের পশ্চিমবঙ্গের মানুষের দুর্ভাগ্য হল, তারা রাজ‍্য বা কেন্দ্র কোন সরকারের সঙ্গেই একাত্মতা অনুভব করার যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেনা – অবশ‍্য, দুই রাজনৈতিক দলের সদস্য, সমর্থকদের বাদ দিয়ে। সবচেয়ে বড় কথা হল, পশ্চিমবঙ্গে দুই রাজনৈতিক দল – ক্ষমতাসীন তৃণমূল আর বিরোধী বিজেপি এমন বিবৃতির বন‍্যা বইয়ে দিচ্ছে যে তাদের মত জনদরদী ও অন‍্য দলের মত জনবিরোধী দল পৃথিবী(!) খুঁজেও পাওয়া যাবেনা। দুই দলের শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্বের হম্বিতম্বি ও অসাংবিধানিক মন্তব‍্য এতে নিঃসন্দেহে ইন্ধন যোগাচ্ছে। কিন্তু এই আপাত লড়াইয়ে সাধারণ মানুষের কি কিছু লাভ হচ্ছে?
আমরা একটি কথা সহজে বুঝতে পারছি যে, পশ্চিমবঙ্গের এবং কেন্দ্রের সরকার উভয়ই সরাসরি ধর্মীয় মেরুকরন করছেনা। কিন্তু তারা যা করছে তা বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, ধর্মীয় উত্তেজনা বৃদ্ধিতে পরোক্ষে উস্কানি দিয়ে দুটি রাজনৈতিক দলই তার ফায়দা লুঠতে চাইছে। এর ফলে সমাজে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ‍্যে বিভেদ, উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সুযোগে সাধারণ মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে শোষণ করা ও অনুন্নয়নের কায়েমী স্বার্থে তাঁরা একসঙ্গে কাজ করছে। ডঃ বিধানচন্দ্র রায়ের আমলের পর পশ্চিমবঙ্গে কটি বড় শিল্প-কারখানা স্থাপিত হয়েছে – তা কেউ বলতে পারবেন কি! এখানে প্রসঙ্গক্রমে একটি ঘটনা প্রবাহের উল্লেখ করা যেতে পারে, যা রাগ নয়, হাসির উদ্রেক করে। এক সময় পশ্চিমবঙ্গের মূখ‍্যমন্ত্রী প্রতি বছর নিয়ম করে বিদেশী শিল্প ধরে আনতে যেতেন! তারপর সরকারি পরিসংখ্যানে বলা হত কত বিশাল অংকের টাকার মৌ স্বাক্ষর করা হয়েছে। এদিকে পোঁ ধরা সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ‍্যমগুলি এমনভাবে সংবাদ পরিবেশন করত, মনে হত, নতুন নতুন কলকারখানা প্রয় খুলেই গেছে; শুধু যা ফিতে কাটাই বাকী! তারপর জনসাধারণ ঠেকে শিখল, ‘মৌ সাক্ষর’ মানে এই শিল্প হবে তার অঙ্গীকারপত্র। এর কোন আইনি বাধ‍্যবাধকতা নেই যে শিল্প হবে বা হচ্ছে। এদিকে রাজনৈতিক দলের দাদাগিরির চাপে একেএকে সব চালু কলকারখানাই একে একে বন্ধ হতে লাগল। সেই সরকার যখন বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা বুঝল, তখন তারা টাটা মোটরসের গাড়ীর কারখানা করার চেষ্টা করেও জনসাধারণের অনীহা ও যে জঙ্গীপনা তারা শুরু করেছিল, সেই একই দাওয়াই প্রয়োগ করে পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান শাসকদল ২০১১তে ক্ষমতাসীন হল। তারপর আমরা ওয়াজেদ আলীর বিখ‍্যাত গল্পের অতি বিখ‍্যাত উক্তি, “সেই ট্র‍্যাডিশান সমানে চলেছে” দেখলাম। আসলে বড় রাজনৈতিক বদল এনে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বদল আনার জন‍্য মানুষের ধ‍্যানধারনা ও চরিত্র বদলের প্রয়োজন। এখানেই রাজনীতির ব‍্যর্থতা প্রতীয়মান। নেতারা জনগনের সেবার বদলে আত্মসেবা ও ক্ষমতার অপব‍্যবহার করে সাধারণ মানুষকে বিভিন্নভাবে উত্তেজিত করে তাদের ভোট পাওয়াই ক্ষমতায় থাকার একমাত্র পথ মনে করেন। ফলে, বামফ্রন্টের সময় যে কর্মবিমুখতা, ধ্বংসাত্মক আন্দোলন, collective burgaining যা পরবর্তী পর্যায়ে শাসকের প্রশ্রয়ে তোলাবাজীর রূপ নেয়, তা এখন মারাত্মক সামাজিক ব‍্যধিতে পরিণত হয়েছে। প্রশাসন ও শিক্ষার মত জায়গায় যোগ‍্যতার বদলে দলীয় সুপারিশ এবং আর্থিক লেনদেনের মাধ‍্যমে নিয়োগ শুরু হয়। এমন অবস্থায় তৃণমূলদল ক্ষমতায় এসে এসব দুর করার চেষ্টা ত করলনা, পরন্তু, দূর্ণীতির গণতান্ত্রিক বিস্তার করে সামাজিক অবক্ষয়ের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিল। এখন রাজ‍্য বা কেন্দ্র, সব জায়গার সরকারই প্রশাসন চালানোয় স্টিক এন্ড ক‍্যারট অর্থাৎ তিরস্কার এবং পুরস্কার নীতিতে শাসকদলের স্বার্থে পুরো প্রশাসন চলে। এখন দেশে নিরপেক্ষ প্রশাসন বলে কার্যকরী কোন প্রশাসন হয় না – শাসকদল নিয়ন্ত্রিত প্রশাসন সমস্ত জায়গায় কাজ করছে। আবার সংবাদ মাধ‍্যম ও বৈদ‍্যুতিন মাধ‍্যমগুলিও শাসকের চাপের মুখে পুরস্কার ও তিরস্কার নীতির প্রথমটিই অবলম্বন করে। সংবাদ মাধ‍্যমগুলি নিজেদের মধ‍্যে চাটুকারীতার এমন প্রতিযোগীতা শুরু করে যে পাঠকের কাছে তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আবার বহু বছরের অভ‍্যাসে আমাদের রাজ‍্যে নিজের পছন্দের খবর দেখতে ও পড়তেই বেশ কিছু মানুষের আগ্রহ থাকায় সংবাদ মাধ‍্যমগুলি খবর পরিবেশন করার বদলে নিজেদের নীতি(!)র মোড়কে খবর দিয়ে থাকে। উদাহরণ দিলে পরিস্কার হবে। ধরা যাক, হিন্দু পুলিশের গুলিতে কোন মুলমানের মৃত‍্যু হলে তা যদি পশ্চিমবঙ্গে ঘটে ত সংবাদ মাধ‍্যম বলবে পুলিশের সতর্কতায় দুষ্কৃতির দুষ্কর্ম করতে বাধা দেওয়ায় মৃত‍্যু! আবার এই ঘটনা যদি কেন্দ্রের শাসকদলের ক্ষমতায় থাকা রাজ‍্যে হয়, তখন সংবাদ মাধ‍্যম জানাবে হিন্দু পুলিশের জিঘাংসার বলি নিরীহ গরীব মুসলমান যুবকের মৃত্যু! এখানেই শেষ নয়, এই ঘটনায় মরাকান্না গেয়ে তারা ফিচার লিখে ফেলবে। হয়ত অর্ধশিক্ষিত, শো বিজনেসের সঙ্গে যুক্ত অভিনেতা অভিনেত্রীদের (পৃথিবীতে একমাত্র এখানেইএদের বুদ্ধিজীবী বলে) দিয়ে মোমবাতি মিছিল করাবে। এভাবে এই বৃহৎ সংবাদ মাধ‍্যমগুলি অর্থের লালসায় সমাজে ধর্মীয় বিভেদ ও ঘৃণা এবং বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। মানুষ না বুঝে এর বলি হচ্ছে। আবার কেন্দ্রের শাসকদলের অধীনে থাকা রাজ‍্যেও একই রকম চরিত্র সেখানের সংবাদ মাধ‍্যমগুলির। খতিয়ে দেখলে বোঝা যায় যে সংবাদ মাধ‍্যমগুলির বড় কাজ হল সমাজে মানুষে মানুষে বিদ্বেষ ও সন্দেহের বাতাবরন তৈরী করা। এতে সুবিধা পায় রাজনৈতিক দলগুলি – তাদের জনবিরোধী কাজের দিক থেকে মানুষের মন যাতে সরে থাকে তার চেষ্টা করে যায় এরা। সেজন‍্য এদের বিশ্বাসযোগ‍্যতা আজ তলানিতে।
আগে সাধারন মানুষের মধ‍্যে কিছু রাজনৈতিক দলের সমর্থক থাকতেন। তবে, বেশীরভাগ মানুষ সরকার ও বিরোধী দলের কাজকর্মের নিরিখে ভোট বাক্সে তাদের সমর্থন ব‍্যক্ত করতেন। বিশেষতঃ পশ্চিমবঙ্গে গত কয়েক দশকে রাজনীতির এমন প্রভাব পড়েছে যে এখন থাকছে সরকার ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের অন্ধ,উগ্র সমর্থক যাদের চলতি বাংলায় ‘চামচা’ বলে, এবং রাজনীতির অপসংস্কৃতি ও ধান্দাবাজীতে বীতশ্রদ্ধ বিপুল সংখ‍্যক মানুষ। এদের মধ‍্যে বেশ কিছু মানুষ ভোট দিতে গিয়ে হয়ত দুই খারাপ দলের প্রার্থীর মধ‍্যে তুলনামূলকভাবে কম খারাপ দলের প্রার্থীকে ভোট দেন। এই বিপুল সংখ‍্যক মানুষ অসংগঠিত এবং এদের সমাজের ভালো করার ক্ষমতা নেই। সেটা রাজনৈতিক নেতারা জানেন। তাই ভোট রাজনীতিতে কোন দলই নিশ্চিত নয় যে তারা সংখ‍্যাগরিষ্ট মানুষের ভোটে জিতবে। সেজন‍্য ভোটের সময় হিংসা, হানাহানি ও খুনখারাবি পশ্চিমবঙ্গের স্বাভাবিক ঘটনা। এরজন‍্য বৃহৎ সংবাদ মাধ‍্যমগুলি, যারা ফাঁদ পেতে মানুষে মানুষে বিভেদ ও হিংসা তৈরীতে ইন্ধন যোগাচ্ছে, তারাই সবচেয়ে বেশী দায়ী। গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোকে চালু রাখতে যে নূন‍্যতম সততা ও শিক্ষার দরকার তার কোনটাই মনে হয় সংবাদ মাধ‍্যম ও নেতাদের মধ‍্যে নেই। সেজন‍্য আজ সাধারণ মানুষ আইনের শাসনের জায়গায় আইনের অপশাসন দেখতে অভ‍্যস্ত! সেই সিনিক‍্যাল মন্তব‍্যটি এখানে সুন্দরভাবে প্রযোজ‍্য, “in democracy, all are eqyal; but sine are more equal than other equals” : পশুখামারের এই উক্তির যথার্থতা আমরা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করছি। পুলিশ, প্রশাসনের সর্বত্র দলদাসতন্ত্র কায়েম হওয়ায় মানুষকে সুস্থ দেহে বেঁচে থাকার জন‍্য ‘দলদাস’ হওয়া প্রয়োজন। ফলে, গণতান্ত্রিক কাঠামোয় স্বৈরতন্ত্র কায়েম হয়েছে। এখানে একটি কথা পরিষ্কারভাবে বলা প্রয়োজন। এই কায়েমী সৈরতন্ত্র যে এই রাজ‍্যেই হয়েছে তা নয়, অন‍্য অনেক রাজ‍্যে, এবং অবশ‍্যই কেন্দ্রেও একই অবস্থা!
দেখা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন তদন্তকারী সংস্থা CBI ও ED রাজ‍্যের রাজনৈতিক নেতা, মন্ত্রীদের ধরছে, জিজ্ঞাসাবাদ করছে – আবার কিছুদিন বাদে সবকিছু পুনর্মুসিকো ভব। এভাবে ছ-সাত বছর এই খেলা দেখে এসব সস্তা চিত্রনাট‍্যের নাটক হিসেবে দেখছে। এতে অবশ‍্য রাজনৈতিক নেতৃত্বের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। আবার রাজ‍্যের ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্ব তীব্রতম ভাষায় কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির সমালোচনা করে কোন বিল রাজ‍্যসভায় পাশ করার সুবিধা করে দিচ্ছেন বিলের বিরুদ্ধে ভোট না দিয়ে সভায় ওয়াক আউট করে। পেট্রোল-ডিজেলের মূল‍্যহ্রাসের ব‍্যপারে দুই দলের তুতু-ম‍্যায়ম‍্যায় নীতি জনসাধারণের মনে বিরক্তি উদ্রেক করে মাত্র। যদি এক বা একাধিক বড় রাজ‍্যে নির্বাচন আসন্ন হয়, তখন আমরা কেন্দীয় সরকারের বদান‍্যতায় পেট্রোল-ডিজেল ও রান্নার গ‍্যাসের দাম কিছুটা কমতে দেখি। আর আমরা জানি যে ভোট শেষ হওয়ার পরে ফলাফল ঘোষণার আগেই এই দাম আরো বাড়বে। এতে মানুষ অভ‍্যস্ত।
রাজনীতিতে পশ্চাদপসারন নিঃসন্দেহে পরাছয়ের ভূমিকা রচনা করে। আমি তিনটি কৃষি বিলের প্রশংসা করে লিখেছিলাম, এই বিলখুলির সম্মিলিত প্রয়োগ যদি ঠিকমত করা হয় তবেই এর সার্থকতা আসবে। কিন্তু আমরা দেখলাম উত্তরভারতের দু-তিনটি রাজ‍্যের সম্পন্ন কুলাকশ্রেণী তাদের অর্থনৈতিক স্বার্থে আঘাত লাগায় আন্দোলন শুরু করল। বিলের সুবিধা নিয়ে বড় বানিজ‍্যিক সংস্থাখুলি কৃষিদ্রব‍্য বিপননে নেমে পড়ল! হুহু করে খাদ‍্য শস‍্য সহ কৃষি পণ‍্যের খুচরো দাম বাড়তে লাগল। আমাদের রাজ‍্যে অপারেশান বর্গার পর কুলাক-জমিদার শ্রেণীর অস্তিত্ব নেই। সুতরাং এ রাজ‍্যে কৃষি বিলের জন‍্য আন্দোলন হল না বটে, তবে, কর্পোরেট জখতের কৃষিপণ‍্যের বিপননের বাজার ধরার সঙ্গে সঙ্গে খাদ‍্যশস‍্যের দাম গুনিতকে বাড়ল। সুতরাং কৃষিবিলের কুপ্রভাব পড়ল সব রাজ‍্যের মানুষের উপর। কৃষিদ্রব‍্য মার্কেটিংয়ে সরকারের নজরদারির ব‍্যর্থতায় মানুষ অসন্তুষ্ট হতে লাগল। এখন কৃষিবিল প্রত‍্যাহার করার কথা বললেও কৃষিপন‍্যের দাম কমানোর চেষ্টা কেন্দ্রীয় সরকার বা রাজনৈতিকদল – কারোরই নেই। আশ্চর্যজনকভাবে এব‍্যপারে রাজ‍্যের শাসকদল কোন সদর্থক পদক্ষেপ করল না।
সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছেন দেশের বরিষ্ট নাগরিকরা। ব‍্যাঙ্কগুলি ফলাও করে প্রচার করে যে সত্তরোর্ধ নাগরিকদের ব‍্যাঙ্কে যেতে হবে না – দরকারে ব‍্যাঙ্ক তাদের কাছে আসবে! সরকার ফলাও করে প্রচার করে রিষ্ট নাগরিকদের সুবিধা দেওয়ার ফিরিস্তি! দুয়ারে সরকারের মত এই দুয়ারে ব‍্যাঙ্কও ভাঁওতা। কোন সরকারি ব‍্যাঙ্ক পশ্চিমবঙ্গে নিখরচায় এই সুবিধা দিচ্ছে বলে জানা নেই। এরপর আসি প্রবীনদের ট‍্যাক্স কাঠামোর সুবিধায়! প্রবীনদের পেনশান ও ব‍্যাঙ্কের সুদ অন‍্য সবার মত করযোগ‍্য! ষাটোর্ধ নাগরিকদের মোট রোজগারের উপর বছরে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা করছাড়ের ভিক্ষা দেওয়া হয়। যাঁরা দেশ গঠনে তাঁদের যৌবনের শ্রম দিয়েছেন, তাঁদের জন‍্য এদেশে কোন সোশ‍্যাল সিকিউরিটি স্কীম এদেশে নেই। অথচ যাঁরা একবার এমপি হয়েছেন তাঁরা লক্ষ টাকা এবং এম এল এ হয়েছেন তারা পঞ্চাশ হাজার টাকা নূন‍্যতম পেনশান পান। এছাড়া আজীবন বিস্তর সুবিধা তাদের জন‍্য দেওয়া হয়। এ ব‍্যাপারে দলমত নির্বিশেষে সব নেতা-নেত্রীই এক। এই দেশে সাংসদরা তাদের যাতায়াতের জন‍্য এয়ার ইন্ডিয়ায় বিজনেস ক্লাসে সরকারি খরচে ভ্রমনের সুবিধা পান। এসব দেখে মনে হয়, স্বাধীনতার আগের ‘বিদেশী শাসক’ চলে গিয়ে এখন ‘দেশী শাসক’রা জনসাধারনকে শাসকের স্বার্থে শাসন করছেন।
আশার কথা, রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে বহু ব‍্যবহারে জীর্ণ, দীর্ণ চিত্রনাট্য যদিও কুশলী অভিনেতাদের অভিনয়গুণে মাজেমধ‍্যে উপভোগ‍্য হয়, তবুও এখন তা বেশী বেশী করে মানুষের বিরক্তির কারন হচ্ছে। একদল রাজনীতিবিদ বিদেশী অনুপ্রবেশ ও হানাদারদের হটাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেটা যখন তারা সম্পন্ন করবে তখন অর্থনৈতিকভাবে শোষিত জনগণের কঙ্কালের উপর দিয়ে সেই জয়(!) আসবে। আবার তাদের বিরোধী, বিভিন্ন প্রদেশের ক্ষমতায় থাকা রাজনীতিকরা কেন্দ্রীয়স্তরে ক্ষমতা দখলের লোভে শত্রুদেশের সঙ্গে আঁতাত করতেও হয়ত পিছপা হবে না! এভাবে চললে এই দেশের উপর আবার পরাধীনতার কালো মেঘ ঘণীভূত হবে। অতয়েব সাধু সাবধান। রাজনীতিকদের উদ্দেশ‍্যে একটাই কথা বলার – সাধারণ মানুষ যদি রাজনীতির উপরে বীতশ্রদ্ধ হয়ে দেশের মাটির সঙ্গে একাত্মতা অনুবব না করে, তবে দেশের সঙ্গে সঙ্গে আপনাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *