ভারতের সংবিধানের পুনর্মূল‍্যায়ন জরুরী

ভারতমাতার পরনের শাড়িটি যদি দেশের সংবিধান হয়, তাহলে বলতেই হবে, আজ স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরে পরিস্থিতি ও পরিবেশ অনুসারে শতদীর্ণ, তালি-তাপ্পার প্রভাবে আসল শাড়ি আর নজরে পড়ছে না! আমাদের ভারতবর্ষ ১৯৪৭ সালে ত্রিখন্ডিত স্বাধীনতা পাওয়ার পর পশ্চিম ও পূর্বদিকের দুই ভূখন্ডের রাষ্ট্রধর্ম হল ইসলাম, আর তদানীন্তন কংগ্রেস নেতৃত্বের অদূরদর্শীতায় ভারতে সর্বধর্ম সমন্বয়ের কথা স্বীকার করে নেওয়া হল।
সংবিধানের ২৫ নং ধারায় আছে – মুক্ত বিবেক, মুক্ত পেশা এবং ধর্মপ্রচারের স্বাধীনতা সকল ভারতীয়ের অধিকার। ২৫(২)(বি) অনুচ্ছেদ বলছে, হিন্দুদের সর্বজনীন ধর্মস্থানে হিন্দুদের অবাধ প্রবেশিধার আছে। আবর ২৬ নং ধারা বলছে, ধর্মীয় কাজে ভারতীয়দের অধিকার স্বীকৃত; সেইসঙ্গে বলছে, “This right has to be excercised in a manner that is in conformity with public order, morality and health”! এই conformityর ব‍্যাপারটা খানিক কল্পিত ও ব‍্যক্তিবিশেষের বোধের উপর নির্ভরশীল, আর বাকিটা ধর্মীয়বোধের interpretation এর উপর নির্ভরশীল! ২৭ নং ধারা অনুযায়ী যে কোন ভারতীয়ের ধর্মের জন‍্য অর্থ (tax) দেওয়া স্বীকৃত হলেও বাধ‍্যতামূলক নয় – যেখানে প্রদত্ত অর্থ একটি বিশেষ ধর্মের উন্নতিকল্পে এবং তার খরচখরচা চালানোর জন‍্য ব‍্যবহৃত হয়। ২৮ নং ধারাটি অত‍্যন্ত প্রণিধানযোগ্য। এখানে বলা আছে যে, সরকারের টাকায় পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে কোন ধর্মীয় নির্দেশ দেওয়া যাবে না।
এই কটি অনুচ্ছেদই ধর্ম সম্পর্কিত। এগুলি ভালভাবে বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় যে, সংবিধান প্রণেতারা এগুলি তৈরী করেছিলেন শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মের কথা বিশেষভাবে মাথায় রেখে। অন‍্য ধর্মগুলি, বিশেষতঃ ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত কোন রকম সাংবিধানিক বাধ‍্যবাধকতা রাখা হয়নি; তেমনই সাংবিধানিক অধিকারের কথাও বলা হয়নি! কারন মনে হয়, ধর্মের ভিত্তিতে ভারত ভাগের ও অন‍্য দুটি ভূখন্ডের ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসাবে মাণ‍্যতা দেওয়ার কারনে সংবিধান প্রণেতাদের মাথায় ইসলামী ধর্মাবলম্বীদের জন‍্য ভারতীয় সংবিধানে rights and privilege এর ব‍্যাপারে কিছু বলা হয়নি – কারন তাদের জন‍্য ভারতভাগ করে আলাদা দুটি ভূখন্ড দেওয়া হয়েছিল। এগুলি এই মূহুর্তে যথেষ্ট স্ববিরোধী ও পক্ষপাতমূলক মনে হতে পারে।
এখন জনসংখ‍্যার নিরিখে ভারতে প্রায় ৩০ শতাংশ ইসলামী নাগরিকের বাস। পৃথিবীতে এমন কোন রাষ্ট্র নেই যেখানে ৩০ শতাংশ কোন ধর্মের মানুষের বাস থাকলে তাদের ঐ দেশে ধর্মীয় সংখ‍্যালঘু বলা হয়। আমাদের নির্বাচনী- গণতন্ত্রে ৪৯ শতাংশ মানুষ যদি কাউকে সমর্থন জানান তা হলেও তিনি পরাজিত হতে পারেন – এমনকি বিরোধী প্রার্থীর তুলনায় এক ভোট বেশী পেলেও একজন বিজয়ী হতে পারেন! এই সংখ‍্যার নিরিখে রাজনীতির গদির ফয়সলা হলেও এভাবে ধর্মীয় সংখ‍্যালঘু বা সংখ‍্যাগুরু নির্বাচন করা যায় না। আমাদের সংবিধানে কোথাও ইসলামী মানুষদের ধর্মীয় সংখ‍্যালঘু বলা হয়নি – যা সুবিধাবাদী রাজনীতিকরা তাদের দলীয় ও ব‍্যক্তিগত স্বার্থে চিহ্নিত করেছেন – এর কোন সাংবিধানিক বৈধতা নেই। হিন্দুরা যদি ধর্মীয় সংখ‍্যাগুরু হন, ইসলামীরা তাহলে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ধর্মীয় সংখ‍্যাগুরু।
ধারা ১৪ অনুসারে যে কোন নাগরিক ভারতে আইনের চোখে সমান। ধারা ১৫ নং অনুযায়ী নাগরিকদের মধ‍্যে ধর্মীয়, জাতিগত, বর্ণগত, লিঙ্গ ও জন্মস্থানের ভিত্তিতে বৈষম‍্য করা যাবে না। আবার ১৬ নং ধারা অনুসারে যে কোন নাগরিকের চাকরী ও জীবিকার ক্ষেত্রে সমান অধিকার! আর, সকল ভারতীয়ের ছটি মৌলিক অধিকার, যা অলঙ্খনীয় হিসেবে উল্লেখ করা হয় তা হল – বক্তব‍্য প্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ জমায়েতের অধিকার, সংঘ (association) গঠনের অধিকার, দেশের যে কোন স্থানে গমন ও বসবাসের অধিকার এবং নিজের পছন্দের আইনসিদ্ধ কর্মসংস্থানের অধিকার। এগুলি ১৯ নং ধারায় লিপিবদ্ধ আছে।
এবার যেটা লক্ষ‍্য করার বিষয় তা হল, ভারতের নাগরিকদের সুনির্দিষ্ট মৌলিক অধিকার ও ধর্মাচরনের অধিকার – যা সংবিধানে স্বীকৃত – তা এই ২০২২ সালে দাঁড়িয়ে নাগরিকদের কাছে অনেক সময়ই পরিহাসের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার সবচেয়ে বড় কারন হল, সংবিধানের অনুচ্ছেদগুলির মধ‍্যে স্ববিরোধীতা – যার সুযোগে খন্ডিতভাবে একটি বা দুটি অনুচ্ছেদ ধরে তার ব‍্যাখ‍্যা করলে তা অনেক ক্ষেত্রেই সংবিধানের মূল ভাবনার পরিপন্থী!
যেমন, সকল ভারতীয়ের ধর্মাচরনের সমান অধিকার – সংবিধান স্বীকৃত। অথচ ধর্মাচরন ও তার সীমারেখা সম্পর্কে কিছু বলা নেই। হিন্দুদের গণেশ চতুর্থী থেকে দূর্গাপুজা, কালীপুজা ইত‍্যাদির অধিকার যেমন স্বীকৃত, তেমনি ইসলামে মূর্তিপুজা নিষিদ্ধ – এমনকি মূর্তিপুজার বিরোধীতা করা জায়েজ! অর্থাৎ ইসলামীরা তাদের ধর্মীয় কারনে যখন হিন্দুদের প্রতিমা ভাঙ্গে, পুজা পন্ড করে, তা তাদের ধর্মাচরণ! এটি কি করে সংবিধান স্বীকৃত হয়? হয়ত এইসব চিন্তা করেই মহম্মদ আলী জিন্না সকল ভারতীয় ইসলামীদের জন‍্য তাদের পাক-ই-স্তান (আল্লার স্থান) চেয়েছিলেন – যুক্তি ছিল, হিন্দু ও ইসলামী দুই পৃথক জাতিসত্বা হওয়ায় তাদের সহাবস্থান অসম্ভব। বাস্তবতা জিন্নার পক্ষে থাকলেও ভারতীয় হিন্দু নেতৃত্ব, বিশেষতঃ কংগ্রেসের নেহরু-গান্ধী এবং তাদের পরম্পরা ভারতের মধ‍্যে এই দুই ভিন্ন জাতিসত্বার সহাবস্থানের জন‍্য জোরজবরদস্তি করে রাজনৈতিক সুবিধাবাদ ও সামাজিক অসহিষ্ণুতার জন্ম দিয়েছে।
১৯৭৬ সালে জরুরী অবস্থার সুযোগ নিয়ে তৎকালীন ইন্দিরা গান্ধীর সরকার ইতিহাসে বৃহত্তম, ৪২তম সংবিধান সংশোধন করে দেশের মূল সাংবিধানিক কাঠামোটাকেই পাল্টে দিলেন। তাঁর অত‍্যধিক উচ্চাকাঙ্খা এবং অসার দম্ভ তাঁকে এলাহাবাদ হাইকোর্টে তাঁর নির্বাচন বাতিলের রায়কে হজম করতে বাধা দেয়। তিনি সংবিধান সংশোধন দ্বারা সংবিধানে প্রদত্ত আদালতের অধিকারের মূলে কুঠারাঘাত করেন। এই সময় তিনি তাঁর সোশালিষ্ট মনোভাবাপন্ন কিন্তু প্রকারান্তরে কম‍্যুনিস্ট মানসিকতার কাছের মানুষদের সাহায‍্য নিলেন। এরা সর্বদাই ভারত ও হিন্দুত্ব বিরোধী হওয়ায় এদের পরামর্শে শ্রীমতি গান্ধী ভারতীয় সংবিধানকে দুমড়ে মুচড়ে এক কিম্ভুতকিমাকার জায়গায় নিয়ে গেলেন। সেখানে শেষ কথা বলার অধিকার শুধুই সংসদের ( সংসদীয় গণতন্ত্র নয়, শুধুই সংসদীয় সংখ‍্যাধিক‍্য নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্র) শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকৃত হল! তিনি সংবিধানের প্রস্তাবণায় দুটি নতুন কথা সংযোজন করলেন – “সমাজতান্ত্রিক” ও “ধর্মনিরপেক্ষ”। তিনি ভারতকে “সমাজতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র” ঘোষণা করলেন! একেই বলেছি – কিম্ভুতকিমাকার – কয়েকটি পরস্পরবিরোধী শব্দের সমাহার! প্রজাতন্ত্র যদি সমাজতন্ত্র হয়, তবে তা গণতান্ত্রিক হয় কি করে? এমনকি চীন পর্যন্ত নিজেকে গণতান্ত্রিক বলে না। তারা গণপ্রজাতন্ত্রী। দেশের সাধারন মানুষকে বোকা মনে করা একশ্রেণীর রাজনীতিকের লালসা ও নোংরা খেলার শিকার হতে হয়েছে দেশবাসীকে। কিছু রাজনীতিক পরিবারের তাৎক্ষণিক লাভ ও ভারতবিদ্বেষীদের দীর্ঘমেয়াদী লাভ ছাড়া এতে কারোর কোন উপকার হয়নি। গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে কখনোই সমাজতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষতা (socialist secular) থাকে না। আশ্চর্যের কথা, আমাদের দেশের শিক্ষা ব‍্যবস্থা কম‍্যুনিস্ট নিয়ন্ত্রণে থাকায় এবিষয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে এর অপব‍্যাখ‍্যা ছাড়া আর কিছু বলা হয় না। সুতরাং আমাদের দেশের সংবিধান এখন “সোনার পাথর বাটি”র মত এক অবাস্তবতার মোড়কে আবদ্ধ! এখানে ৪২ তম সংবিধান সংশোধনে সংসদে সংখ‍্যাগরিষ্টের ভোটে দেশে যা খুশী তাই করার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।
এর ফলে ভারতীয় সংবিধানের বহু ক্ষেত্রেই স্ববিরোধীতার জায়গা তৈরী হচ্ছে। তার সুযোগ নিচ্ছে স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক মহল। যেমন, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে কাশ্মীরের বিশেষ অবস্থান দেওয়া ৩৭০ ধারা এবং ৩৫এ ধারা, যা শেখ আবদুল্লার সঙ্গে জওহরলালের কোন গোপন আঁতাতের ফল বলে বিশেষজ্ঞদের অনুমান, তা সম্প্রতি বিলুপ্ত হওয়ায় ভারতের অখন্ডতার বিরোধী দলগুলি প্রতিবাদ ও প্রতিরোধে সোচ্চার। আবার কাশ্মীরের সাধারন মানুষদের দারিদ্র‍্যে নিমজ্জিত রেখে তাদের শোষণের ইতিহাস যেমন দীর্ঘ, তেমনই তাদের দারিদ্র‍্যের সুযোগ নিয়ে তাদের ভারতবিরোধী শক্তির পুষ্টিকরনের জন‍্য ব‍্যবহার করা শুধু পাকিস্তান নয়, ভারতে রাজনীতি করা কিছু রাজনৈতিক দলও সমানভাবে চালিয়ে গেছে। এই দলগুলির কারো উদ্দেশ‍্য ভারতের বিরোধীতা করা, আবার কারো উদ্দেশ‍্য – এলোমেলো করে দে মা, লুঠেপুটে খাই!
ভারতের রাজনীতির স্তর অত‍্যন্ত নিম্নরুচির হওয়ায় রাজনীতিকরা সতত মিথ‍্যাচার করার সাহস দেখায়। সাম্প্রতিক একটি সংবাদে জানা যায় যে, সিপিএমের সাধারন সম্পাদক সীতারাম ইয়েচোরী বলেছেন, হিজাব ইসলামী মহিলার “সাংবিধানিক অধিকার”! এমন ডাহা মিথ‍্যা বলার দুঃসাহস মাত্র দুধরনের মানুষ করতে পারেন – এক, যিনি সবজান্তা ভাব দেখানো এক গন্ডমূর্খ; দুই, যিনি যাদের উদ্দেশ‍্য করে বলছেন, তাদের গন্ডমূর্খ মনে করেন। ইয়েচোরীর হিম্মত থাকলে সততার সঙ্গে এটি সংবিধানের কত ধারায় আছে তা উল্লেখ করতেন! আসলে উনি ভারতীয় সংবিধান না পড়ে এই ধরনের ‘জ্ঞান’ দেন। আবার কংগ্রেসের এক প্রাক্তণ মূখ‍্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়া বলেছেন, ইসলামী মহিলাদের “মৌলিক অধিকার” নাকি হিজাব পরিধান করা! ২০১৭ সাল থেকে চীন, উত্তর কোরিয়ায় হিজাব নিষিদ্ধ। ইরানের ইসলামী মহিলারা হিজাবের বিরুদ্ধে তীব্রভাবে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। সেখানে তথাকথিত নীতি পুলিশের হাতে ৮০০ র বেশী আন্দোলনকারী নিহত হয়েছেন। মনে হচ্ছে সীতারাম আর সিদ্ধারামাইয়ারা ভারতে ইসলামের নীতি পুলিশের ভূমিকা নিচ্ছেন! ইওরোপ ও আমেরিকায় হিজাবের বাধ‍্যবাধকতা নেই – নেই সংযুক্ত আরব আমীরশাহীতেও। তবু এখানকার অর্ধশিক্ষিত, ধান্দাবাজ, ভারতবিরোধী কিছু রাজনৈতিক নেতারা শুধু জেহাদীদের তুষ্টিকরনের জন‍্য এমন নির্জলা মিথ‍্যা বলে জনমানসে উপহাসের পাত্র হচ্ছেন। এরা কিসের বাধ‍্যতায় এমন মিথ‍্যাচার করছেন তা বোঝা দায়।
যাই হোক, সংবিধানের জায়গা থেকে ভারতের অখন্ডতা রক্ষা, বিভিন্ন ধর্মীয় ও অন‍্যান‍্য সংরক্ষণ নীতির কারনে সমাজে যে বৈসম‍্য বৃদ্ধি পাচ্ছে তা শুধরে নেওয়ার জন‍্য সংবিধানের সংশোধন ও পরিমার্জন জরুরী।
দেশের সংবিধানে “ধর্মনিরপেক্ষতা”র কথা বলা হয়েছে। এটা কি? আমরা জানি লিঙ্গ ভিত্তিক সাধারনভাবে দুই প্রজাতি – পুরুষ ও স্ত্রী-জাতি। আর freak of the nature হচ্ছে তৃতীয় লিঙ্গের অস্তিত্ব – লিঙ্গনিরপেক্ষ। তেমনি ভারতের মানুষদের ধর্ম ভিন্ন ভিন্ন। তবে freak of religion হতে পারে – ধর্মনিরপেক্ষ। হিন্দুধর্মে মানুষের ধর্মনিরপেক্ষতার কোন স্বীকৃতি নেই। ইসলামে, কোরানমতে ধর্মনিরপেক্ষতা হালাল অর্থাৎ গর্হিত কাজ। বাইবেলেও ধর্মনিরপেক্ষতার নিন্দা করা হয়েছে। সুতরাং ধর্মাচরন করা, যা সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকার, কোন হিন্দু, ইসলামী বা খ্রীষ্টান কখনো ধর্মনিরপেক্ষ হতে পারে না। সমাজে প্রচার করা হয়, ধর্মনিরপেক্ষতা পালনের দায় শুধুই সনাতনী হিন্দুদের! সেজন‍্য একে বহু বছর ধরে “ইসলামী ধর্মনিরপেক্ষতা” বলে আসছি। কারন, ভারতীয় কম‍্যুনিস্ট ও অর্ধশিক্ষিত বাঙ্গালী বুদ্ধিজীবীকুল ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে ইসলামী এলাকায় দূর্গাপুজা ও মন্দিরের সন্ধ‍্যারতির বিরুদ্ধে ; তারা কিন্তু মসজিদের আজানের বিরুদ্ধে নয় – সেটা নাকি ধর্মীয় অধিকার! তারা দূর্গামন্ডপে কোরান, বাইবেল রাখলেও মসজিদ বা গীর্জায় গীতা বা হনুমান চালিশা রাখার কথা ভুলেও বলেন না! সুতরাং এই “ধর্মনিরপেক্ষ”তার ব‍্যবহার সচেতনভাবে করা হচ্ছে শুধু একটি কথা মাথায় রেখে – ভারতে হিন্দুত্বকে ধ্বংস করা গেলেই তার অখন্ডতাকে বিনষ্ট করা যাবে – আর তাতেই গঙ্গাধর অধিকারীর তত্ত্বকে লাগু করা যাবে। কি সেই তত্ত্ব, যা ভারতীয় কম‍্যুনিস্টরা গ্রহণ করেছে? কম‍্যুনিস্ট পার্টির তাত্ত্বিক নেতা ও প্রাক্তণ জেনারেল সেক্রেটারীর এই তত্ত্ব অনুযায়ী, ভারত কোন রাষ্ট্র নয়, কিছু সার্বভৌম রাজ‍্যের সমষ্টি মাত্র! আবার “ভারত তেরে টুকরে হোঙ্গে” নাড়া লাগানো মানুষদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বহুদিনের জিহাদী- কম‍্যুনিস্টের ঐক‍্যবদ্ধ জোটের প্রজেক্ট সফল করা যাবে!
অতয়েব, সাধু সাবধান। সাংবিধানিক পরিবর্তন ও পরিমার্জন করে গুরুত্ব দেওয়া হোক – শুধুমাত্র দেশের সকল নাগরিকের সমান অধিকার ও দায়িত্বে। গণতান্ত্রিক বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পরিপন্থী বলে তার উপর লাগাম দেওয়ার আশু প্রয়োজন আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *