তালিবানিস্থান ও তার প্রভাব

১৫ই আগষ্ট,২০২১ এর নাটকীয় পটপরিবর্তনের মধ‍্যে দিয়ে আফগানিস্তানে নতুন করে তালিবানি যুগের সুচনা হল। আফগানিস্তানের নির্বাচিত সরকারকে আমেরিকা ও ন‍্যাটো বাহিনী নিরাপত্তা দিলেও আফগান সরকারের পাহাড়প্রমাণ দূর্ণীতি ও স্বজনপোষনের কারনে আফগানিস্তান সরকার কুড়ি বছর সময় পেলেও শক্তিশালী সেনাবাহিনী তৈরী করতে পারেনি। তার ফলে তালিবান বাহিনী প্রায় বিনা রক্তপাতে কাবুল-কান্দাহারসহ আফগানিস্তানের ৯৫% জায়গা দখল করতে সক্ষম হল। এর কারন পরপর আলোচনার শেষে এই ঘটনাপ্রবাহ প্রতিবেশী দেশগুলির উপর কি প্রভাব ফেলতে পারে তা ব‍্যখ‍্যা করার চেষ্টা করা সম্ভব হবে।
আফগানিস্তান সরকারের দূর্ণীতির কারনে সরকারের বিভিন্ন বিভাগের উপর রাজনৈতিক কন্ট্রোল প্রায় ছিলই না। উপরন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় থেকেই আমেরিকা তার পররাষ্ট্রনীতিতে আফগানিস্তানের ক্ষেত্রে বড় রকমের ভুল করে বসেছিল। তালিবানদের দেশ চালানোর অভিজ্ঞতা ও তাদের নীতির কথা মনে থাকলে এই গোষ্ঠীকে বেড়ে ওঠার সুযোগ দেওয়ার মত কাজ অতিবড় মূর্খও করবেনা। বারাক ওবামা লাদেন নিধনে সাফল‍্য পেয়ে এতটাই সন্তুষ্ট ও আত্মতৃপ্ত ছিলেন যে তালিবানদের ধ্বংস করার কোন চেষ্টাই আর করেননি। হয়ত ভবিষ‍্যতে রাশিয়া বা চীনের বিরুদ্ধে তাদের ব‍্যবহার করার সুপ্ত ইচ্ছা এক্ষেত্রে কাজ করে থাকতে পারে। পরবর্তীতে ট্রাম্প প্রশাসন তালিবানদের মাদক পাচার ব‍্যবসা ও তোলবাজির বিরুদ্ধে কোন ব‍্যবস্থা নেয়নি। আবার পাকিস্তানের মাধ‍্যমে তালিবানদের ট্রেনিং ও অন‍্যান‍্য লজিস্টিক সহায়তা তারা করে গেছে। ভারতের কুটনৈতিক চ‍্যানেল এ ব‍্যপারে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরব হলেও তা আসল সত‍্যিটা খানিক আড়াল করেছে মাত্র। কারন, ন‍্যাটো এবং আমেরিকার আর্থিক অনুদান যে পাকিস্তান আল কায়েদা ও তালিবান জঙ্গীদের প্রশিক্ষণ, বিস্তার এবং আধুনিকীকরনে ব‍্যবহার করছে তা আমেরিকা জানত না – একথা কোন সুস্থ মানুষ বিশ্বাস করবেনা। পক্ষান্তরে, আমেরিকা ও ন‍্যাটো দেশগুলি চেয়েছে আফগানিস্তান, বালুচিস্তান ও কাশ্মীরে টেনশান এবং জঙ্গী কাজকর্ম অব‍্যহত থাকুক। তারা মনে করেছে এর ফলে এই উপমহাদেশে অসন্তোষ ও জঙ্গী কাজকর্ম চলতে থাকলে তাদের অস্ত্র ও অন‍্যান‍্য সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি বাড়বে আর ভারতকে পাকিস্তানের মত বেশী করে তাদের মুখাপেক্ষী করে রাখা যাবে। শুধু তাই নয়, পশ্চিমী দেশগুলি কখনো চায়নি যে ভারত ও পাকিস্তানের মধ‍্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠুক। সেকারনে পরপর এমন সরকারকে তারা পাকিস্তানে বহাল রাখতে চেয়েছে যারা ভারতের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক জেহাদকেই মূলমন্ত্র হিসেবে দেখেছে। বাংলাদেশের জন্মকে না মানতে পেরে পাকিস্তান এবং তাদের এজেন্টরা “ভারত তেরে টুকরে হোঙ্গে” শ্লোগান তোলার পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে “দিল্লীর এজেন্ট” বলে প্রচার করছে। ভারত বিরোধী ও ভারতের বিভাজনকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা বানিয়ে পাকিস্তান শুধু আল কায়েদা বা তালিবান নয়, বিশ্বের তাবৎ ইসলামী জঙ্গী সংগঠনগুলির আঁতুরঘরে পরিণত হয়েছে।
যখন ট্রাম্প প্রশাসন আফগানিস্তান থেকে সৈন‍্য অপসারণের কথা ঘোষণা করে তখন থেকেই পাকিস্তান আল কায়েদা ও তালিবান জঙ্গীদের আফগানিস্তান দখলের ব্লুপ্রিন্ট তৈরী করে। এই সময় অতিমারী ও নির্বাচন নিয়ে প্রশাসন অত‍্যন্ত ব‍্যস্ত হয়ে পরায় সুষ্ঠুভাবে সেনা অপসারণের কোন পরিকল্পনা ট্রাম্প করতে পারেননি। পরবর্তীতে বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতায় এসে সৈন‍্য তুলে নেওয়ার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করেন। এর দুটি প্রাথমিক কারন অনুমান করা য
আয়। প্রথম হচ্ছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানে আমেরিকান ও ন‍্যাটো বাহিনীর বিপুল খরচ বহন কর
আ অত‍্যন্ত কঠিন হয়ে পরেছিল। দ্বিতীয়তঃ, বাইডেন প্রশাসন এই উপমহাদেশে পাকিস্তান ও ভারতের মধ‍্যে পাকিস্তানকে অধিকতর নিকট সহযোগী মনে করে। বিশেষতঃ ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমলা হ‍্যারিসের কথাবার্তা ও কাজকর্ম সেইদিকেই ইঙ্গিত করে। সেই পূর্বনির্ধারিত ধারনা থেকে আমেরিকার বর্তমান প্রশাসন আন্তর্জাতিক নীতিতে কয়েকটি বালখিল‍্যসুলভ ভুল সিদ্ধান্ত নিল।
আফগানিস্তানে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ‍্যে উল্লেখযোগ্য হল হাজারা, পাস্তুন, উজবেক, তাজিক, তুর্কমেন ও বালুচ। এছাড়া আরো কিছু ছোট ছোট গোষ্ঠীও আছে। এইসব বড় গোষ্ঠীর সঙ্গে বাইডেন প্রশাসন সৈন‍্য অপসারণের ব‍্যপারে কোন বৈঠক করেছে বলে জানা যায়না। শুধু তাই নয়, উত্তরের পঞ্জশির অঞ্চল, যা আগের তালিবান সরকার দখল করতে পারেনি; এমনকি সোভিয়েত রাশিয়াও পঞ্জশিরের উপর রাজ করতে পারেনি। বিভিন্ন গোষ্ঠীতে বিভক্ত আফগানরা অত‍্যন্ত স্বাধীনচেতা প্রকৃতির। পঞ্জশির তার ব‍্যতিক্রম নয়। এই দূর্গম এলাকায় সেখানকার জাতীয় বীর আহমদ শাহ মাসুদের নেতৃত্বে প্রথমবার তালিবান বাহিনীকে রুখে দিয়েছিল। তারপর ওসামা বিন লাদেনের চক্রান্তে এই আহমদ শাহ মাসুদকে হত‍্যা করা হয়। সেজন‍্য এখন তাদের নেতা এবং আহমদ শাহ মাসুদের পুত্র আহমেদ মাসুদ এদের নেতা। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, এবারও তালিবান বিনাযুদ্ধে পঞ্জশির দখল করতে পারবেনা। আফগান ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লা সালেহ তাঁর দলবল সহ এই আহমেদ মাসুদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। তিনি আফগানিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী নিজেকে দেশের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছেন। এই মুহূর্তে পঞ্জশিরের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা বাগলানের তিনটি জায়গা – পুল-ই-হিসার, দেহ-সালাহ এবং বালুতে এদের মিলিত বাহিনীর সঙ্গে তালিবানের লড়াই অব‍্যহত। ওদিকে রাশিয়ার ঘনিষ্ট তাজিকিস্তান তালিবানদের বিরুদ্ধে সর্বাত্বক যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।
এবারের পরিস্থিতি আগের বারের থেকে খানিকটা ভিন্ন। প্রথমতঃ, বাইডেন প্রশাসন তালিবানদের সঙ্গে ছাড়া আর কোন আফগান গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনায় বসেনি! অধিকন্তু, পাকিস্তান যে আফগানিস্তানে জঙ্গীদের মদত দিচ্ছে তা জানা সত্বেও আমেরিকা পাকিস্তানকে বিশ্বাস করেছে! ফলে, তালিবান হুমকির কাছে শর্তবিহীন নতিস্বীকার করে মার্কিন সৈন‍্য অপসারণের কাজ ৩১শে আগস্টের মধ‍্যেই করবে বলে মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে। এদিকে তালিবানদের সমর্থন করে চীন এই অঞ্চলের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ হিসেবে নিজেদের তুলে ধরতে সমর্থ হল। সঙ্গে রাশিয়াও তালিবানদের প্রতি এখনো পযর্ন্ত নরম মনোভাব নিয়ে চলছে। বাইডেনের ভুল সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্বে আমেরিকার দাদাগিরির অবসানের সুচনা হল। এখন বাইডেন প্রশাসনের অবস্থা সাপের ছুঁচো গেলার মত। না পারছে তালিবানদের গিলতে; না পারছে উগরে ফেলতে। এগুলেও বিপদ, আবার পিছলেও বিপদ।
এবার আসি পাকিস্তান-যোগের কথায়। পাকিস্তানের অর্থনীতি বিদেশী সাহায্য ছাড়া দেউলিয়া হওয়ার জায়গায় দাঁড়িয়ে গেছে। তারা সাহায্য পাওয়া বিদেশী মুদ্রার প্রায় পুরোটাই দুটি খাতে ব‍্যয় করছে। একটি হল, ভারতের বিরুদ্ধে ব‍্যবহারের জন‍্য অস্ত্রভান্ডার বৃদ্ধি ও অন‍্যটি হল তালিবান, আল কায়দা, জৈশি মহম্মদ ইত‍্যাদি জঙ্গী সংগঠনগুলির লালন, পালন ও ট্রেনিং। কয়েকদিন আগে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে জৈশি মহম্মদ ও লস্কর-ই-তৈবার মত জঙ্গী গোষ্ঠীগুলি তালিবানের সমর্থনে মিছিল বের করেছে। প্রথম থেকেই তাদের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তালিবানদের দরাজ সার্টিফিকেট দিয়ে চলেছেন। সর্বোপরি ইমরানের দলের এক নেত্রী নীলম ইরশাদ শেখ এক টিভি সাক্ষাতকারে বলেছে যে, ভারত থেকে কাশ্মীরকে ছিনিয়ে নিয়ে স্বাধীন করতে পাকিস্তানের সঙ্গে তালিবানরাও যোগ দেবে। পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের প্রধান ফৈজ হামিদের সঙ্গে তালিবানের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের মোল্লা বেরাদরের বৈঠক হয়েছে। বলা হচ্ছে, তালিবান প্রধান হায়বাতুল্লা আখুন্দজাদা পাকিস্তানে বসেই তার কার্যকলাপ চালাচ্ছে। এসবই পাকিস্তান করে চলেছে ভারতকে ভাঙ্গার বাসনা নিয়ে। কিন্তু তাদের কয়েকটি মারাত্মক ভুলের জন‍্য পাকিস্তানকেই চরম মূল‍্য দিতে হবে। কিভাবে?
প্রথমতঃ তালিবান এমন একটি জঙ্গীগোষ্ঠী যারা যুদ্ধ ও রক্তপাত ছাড়া আর কিছুই জানে না। দেশ শাসন ও অন‍্যদের সঙ্গে মিলেমিশে থাকার ধারনা বা বোধ, কোনটাই তাদের নেই। ফলে সম্পূর্ণ আফগানিস্তান তাদের দখলে এলে তারপর তারা নতুন নতুন যুদ্ধক্ষেত্র বাড়াতে চাইবে। এরজন‍্য ভারতের কাশ্মীরে ঢুকতে গেলে পাকিস্তানের বালুচিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে তাদের শাসন আগে কায়েম করতে হবে। মহিলাদের সঙ্গে আচরনসহ বিভিন্ন কারনে পাকিস্তানের প্রশাসনের সঙ্গে তাদের বিরোধ বাঁধা শুধু সময়ের অপেক্ষা। কান তাদের ‘শরিয়তী শাসন’ পাকিস্তান মানেনা। ওদিকে আবার আফগানিস্তান থেকে প্রতিদিন বিপুল সংখ‍্যক শরণার্থী পাকিস্তানে ঢুকছে। পাকিস্তানের তালিবান মদতের কারনে তার সঙ্গে আফগান সীমান্ত বন্ধ করা অসম্ভব। পাকিস্তানের ভঙ্গুর অর্থনীতি এই বিপুল পরিমাণ শরণার্থীর চাপে বিপর্যস্ত হবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পাকিস্তানকে পাশ্চাত‍্যশক্তিগুলির অর্থসাহায‍্যের সম্ভাবনা ক্ষীণ। উপরন্তু অর্থনৈতিক করিডোরের জন‍্য পাকিস্তানের উপর চীনে নির্ভরতা অনেকটা কমে যাবে যদি আফগানিস্তানের তালিবানিদের সঙ্গে চীনের সুসম্পর্ক থাকে। বিশ্বের জঙ্গী সাপ্লাইয়ের কারখানা পাকিস্তানকে সেই অর্থে চীন সহ কোন দেশই বিশ্বাস করে না। এমতাবস্থায় পাকিস্তান চেষ্টা করে যাবে যাতে আফগান শরণার্থীদের বড় অংশকে ভারতবিরোধী জঙ্গীগোষ্ঠীতে রূপান্তরিত করা যায়। কিন্তু আফগানিস্তান থেকে এই ধরনের মানসিকতার কোন মানুষ শরণার্থী হয়ে আসবেনা। যারা আসবে তারা তালিবান-বিরোধী শান্তিপ্রিয় মানুষ। জঙ্গী মানসিকতার বিরোধী বলেই তারা দেশ ছেড়ে অন‍্য দেশে শরণার্থী হয়ে আসছে। সুতরাং এক্ষেত্রেও পাকিস্তানের পরিকল্পনা ব‍্যর্থ হতে বাধ‍্য। আবার তালিবান তাদের তোলাবাজির জন‍্য পাকিস্তানকেই সহজ শিকার হিসেবে পাবে। আর তালিবানের সঙ্গে পাকিস্তানের বিবাদ শুরু হলেই তালিবান পাকিস্তানকে খন্ড বিখন্ড করার চেষ্টা করবে। তখন এই পুরো অঞ্চলটায় চীনের দাদাগিরি বাড়বে – একথা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
এদিকে ক্রমশঃ তালিবানের দখলে থাকা আফগানিস্তানে যেভাবে মহিলা ও সাধারণ মানুষের উপর অত‍্যাচার আর ফতোয়ার মাত্রা বাড়ছে তাতে রাশিয়ার তাঁবে থাকা তাজিকিস্তান তালিবানের বিরুদ্ধে চলে গেছে। মনে রাখতে হবে যে আফগানিস্তানের জাতিগোষ্ঠীর মধ‍্যে ৪৬ শতাংশ মানুষ তাজিক – যাদের সঙ্গে তাজিকিস্তান একাত্মতা অনুভব করে। পাকিস্তানের শত চেষ্টাতেও তাজিকিস্তান তালিবানদের দখলকে স্বীকার করেনি, উপরন্তু তালিবানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। সম্প্রতি এক জঙ্গী হানায় কাবুলে তেরোজন মার্কিন সেনা সহ প্রায় দেড়শো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মার্কিন সেনাদের মৃত্যুর দায় এর মধ‍্যেই সরাসরি বাইডেন প্রশাসনের উপর পড়েছে। তালিবান জঙ্গীদের উপর নরম থাকায় বাইডেন প্রশাসনকেই এর জবাব দিতে হবে। তালিবান অবশ‍্য এই নাশকতার দায় আইসিসের উপর চাপিয়েছে। তবে এই মূহুর্তে তালিবান কন্ট্রোলে থাকা কাবুলে আইসিস এসে নাশকতা চালিয়ে চলে গেল- এমন গল্প বিশ্বাস করার মানুষ খুঁজে পাওয়া শক্ত। আবার পাকিস্তান ও বাইডেন প্রশাসন মিলিতভাবে ‘ভাল তালিবান’ আর ‘খারাপ তালিবান’ তত্ত্ব খাড়া করার অক্ষম প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।
এখনো অব্দি ভারতের ভূমিকা এ ব‍্যপারে যথেষ্ট প্রশংসার দাবী রাখে। ভারত শত উস্কানিতেও কোন বেফাঁস মন্তব‍্য করেনি। আর তার একমাত্র প্রায়োরিটি রেখেছে আফগানিস্তানে আটকে পরা ভারতীয়দের ও আফগান নাগরিকদের মধ‍্যে শিখ ও হিন্দু, যারা ভারতে আসতে চায়, তাদের ভারতে নিয়ে আসা। এদিকে ভারতীয় দুতাবাসে ভাঙ্গচুর ও বহু ভারতীয় ভিসা লুঠপাট করার ঘটনার পর ভারত শুধু ই-ভিসা ছাড়া আর সব ভিসা বাতিল করে দিয়েছে। ফলে, ওই লুঠ করা ভিসা ব‍্যবহার করে কোন অবান্ছিত মানুষ ভারতে ঢুকতে পারবেনা।
পরিশেষে বলি, আন্তজার্তিক স্বীকৃতি না পেলে ও অর্থ সাহায্য না মিললে পাকিস্তান ও তালিবান – কারো পক্ষেই দীর্ঘদিন বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। যত তারা চাপে মধ‍্যে পড়বে, তত শরিয়তী আইনের নামে ধর্মতান্ত্রিক রাষ্ট্রের দিকে ঝুঁকবে। ফল, একমাত্র শক্তিশালী রাষ্ট্র যে এখনোসতালিবানের সঙ্গে আছে, অর্থাৎ চীন – সেও তাদের সম্পর্কে নতুন করে পর্যালোচনা করতে বাধ‍্য হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *