তুঘলকী প্রশাসন ও ওমিক্রন ভূত

আবার করোনার ভ্রুকুটি – আবার গরীবের পেটে লাথি। এবারের করোনা ভূত – তার নাকি ওমিক্রন রূপ! অতয়েব আবার বিধিনিষেধ – আবার ‘দিন আনি দিন খাই’ মানুষের দীর্ঘনিশ্বাস – চোখের জলে মাটি ভিজবে – বেসরকারী হাসপাতালগুলির লাভের ঘর স্ফীত হবে – ‘অনুপ্রাণিত’ মানুষদের ঘরে অতিরিক্ত সম্পদের সংস্থান হবে। এমন অবস্থা কেন, কিভাবে হল – এর পেছনে কুশীলব কারা – সেই তথ‍্য বিশ্লেষণ করা অতি প্রয়োজন।
বলা হচ্ছে, করোনা ভাইরাসের ওমিক্রন ভ‍্যারিয়েন্ট, যাতে ৩৭ জায়গায় প্রোটিনের কার্বোহাইড্রেট ও অ‍্যামিনো অ‍্যাসিডের ট‍্যগিং পয়েন্ট পরিবর্তিত হয়েছে, সেটি অত‍্যন্ত বেশী মাত্রায় সংক্রামক ও তার ফলেই নাকি করোনা আক্রান্তের সংখ‍্যার এই বাড়বাড়ন্ত! এমন ভাবের ঘরে চুরি বোধহয় এখনকার প্রশাসনের পক্ষেই সম্ভব। পরিসংখ্যান কিন্তু সম্পূর্ণ অন‍্য কথা বলছে। গত ১লা জানুয়ারি, ২০২২এর সরকারী পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের একদিনে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ‍্যা সাড়ে ঢার হাজার, যার মধ‍্যে ওমিক্রন আক্রান্ত মাত্র ১৯। এর থেকে প্রমাণ হচ্ছে যে, আমাদের রাজ‍্যের ক্ষেত্রে ওমিক্রন নয়, সবচেয়ে ভয়াবহ ভ‍্যরিয়েন্ট ডেল্টা বা ডেল্টা প্লাসে আক্রান্তের সংখ‍্যায় অতিবৃদ্ধি হয়েছে। আবার এই সময়ে লক্ষ‍্য করা যাচ্ছে যে, উত্তর-পূর্বের রাজ‍্যগুলিতে – বিশেষতঃ খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বী অধ‍্যুষিত নাগাল‍্যান্ড, মিজোরাম ও মেঘালয়ে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা গত কয়েকদিনে বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া দেশের বড় শহরগুলির মধ‍্যে মুম্বাই, পুণে, দিল্লী, কোলকাতা ও ব‍্যাঙ্গালোরে করোনা রোগীর সংখ‍্যা ১০% এর মত বৃদ্ধি পেয়েছে। কোলকাতায় এই বৃদ্ধি সর্বোচ্চ – ২৩% এর উপর!
এই পরিসংখ্যান আমাদের যে তথ‍্য দিচ্ছে তার থেকে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, বর্ষপূর্তি ও খ্রীষ্টমাসের আনন্দে বাঁধনহারা মানুষের কোভিড প্রোটোকল বিরোধী জমায়েত, মাস্ক না পড়ে, সামাজিক দূরত্ববিধি না মানা – এসব যেখানেই বেশী হয়েছে সেখানেই করোনার আক্রমণ অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজ‍্যের মূখ‍্যমন্ত্রীর দ্বারা উন্মোচিত,সরকারী খরচে আলোর মেলা – যা দেখতে লক্ষ মানুষের ভিড় জমেছে – তা যেকোন পুজোর ভিড়কে ছাপিয়ে যায়। কোর্টের আদেশে প্রশাসন ও পুজো কমিটিরা এই ব‍্যপারে সতর্ক থাকায় পুজোর সময় রাজ‍্যে তৃতীয় ঢেউ আটকানো গেছে। তবে এবারের এই বিপর্যয়ের দায় বহুলাংশে রাজ‍্যের বৃহৎ সংবাদ-মাধ‍্যমগোষ্ঠীগুলিকে নিতে হবে। দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজকর্মের জন‍্য এরা আগেই যথেষ্ট পরিচিত। পুরোনো নানা ঘটনার উল্লেখে বিড়ম্বনা বাড়ানো এই প্রতিবেদনের উদ্দেশ‍্য নয়। তবু একথা মানতে হবে, আমদের সংবাদ-মাধ‍্যমগুলি আগে থেকে কোন অনুষ্ঠানের বা উৎসবের ‘হাইপ’ তুলতে থাকে। এর কারন এখন সবাই বোঝেন। নিজেদের লাভের কড়ি বাড়াতে গিয়ে এরা এই খ্রীষ্টমাস ও ইংরেজী বর্ষবরণের ‘হাইপ’ তুলতে একে অন‍্যের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামল। ওদিকে ‘কম জানা, বেশী বোঝা’ ধর্মনিরপেক্ষ (!) বাঙ্গালী মধ‍্যবিত্ত তাদের স্ট‍্যাটাস দেখানোর জায়গা হিসেবে করোনা রোগীর সংখ‍্যাবৃদ্ধিতে সরাসরি ইন্ধন জুগিয়েছে। প্রাথমিক তথ‍্য বলছে, উচ্চবিত্ত ও নিম্নবিত্তরা এবং বয়স্ব নাগরিকরা এই হুজুগ থেকে দূরে থাকায় তাঁদের মধ‍্যে করোনা আক্রান্তের সংখ‍্যা তুলনামূলকভাবে কম। যখন উৎসব শেষ, বৃহৎ সংবাদ-মাধ‍্যমগুলি বাঙ্গালীর কফিনে পেরেক পোঁতার কাজে নেমে পড়ল। এবারের উদ্দেশ‍্য হচ্ছে সাধারণ মানুষকে ঘরে আটকে রেখে অর্থনীতির চরম ক্ষতি করা। নেপথ‍্য কারন মনে হয়, ‘অনুপ্রেঢ়ণা’ ও ‘অনুপ্রাণিত’ প্রশাসনকে জনসাধারনের রোষ থেকে বাঁচানো।
তারজন‍্য প্রথমেই ওমিক্রন ও তার সংক্রমনের ভয়াবহতা নিয়ে নিয়ে ভূতের গল্প শোনানোর মিথে জনমনে ভীতি ছড়ানো শুরু হয়েছে। বিভিন্ন সাংবাদিকের জ্ঞানগর্ভ লেখায় সেকি জোশ!…… আমার মনে পড়ল, প্রমথনাথ বিশীর এক অসাধারণ উক্তি। এই প্রথিতযশা সাহিত‍্যিক বহু বছর এক বৃহৎ সংবাদপত্রে সাংবাদিক ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ‍্যাপনার কাজে যোগদান করেন এবং সেখান থেকেই কর্মজীবনে অবসর নেন। তারপর তিনি কোন এক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোলকাতা সেনেট হলে একটি আমন্ত্রিত বক্তৃতা দিতে আসেন। বক্তৃতার শেষে তিনি যখন চলে যাচ্ছেন, তখন কিছু সাংবাদিক তাঁকে ঘিরে ধরে জানতে চান যে তিনি তাঁর কর্মজীবনে দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন মেরুতে কাজ করেছেন। তারা খুব অল্প কথায় তাঁর কাছে জানতে চান দুই জীবনের অভিজ্ঞতার কথা। প্র.না.বি.(এই নামে তিনি সমধিক পরিচিত ছিলেন) অল্প কথায় বললেন, “প্রথম জীবনে আমি দেখেছি মূর্খের পান্ডিত্ব আর পরের জীবনে দেখছি পন্ডিতের মূর্খামি”। এর থেকেই বোধহয় বোঝা গেল, ওমিক্রন সংক্রান্ত আমাদের জ্ঞান বিভিন্ন প্রকাশিত গবেষনাপত্র থেকে নয়, মধ‍্যবিত্ত বাঙ্গালী এই জ্ঞান নিয়েছে সাংবাদিকদের থেকে! তবে, আজকের দিনে মানুষ উদ্দেশ‍্যবিহীন কোন কাজ করেনা। সংবাদ-মাধ‍্যমও তার ব‍্যতিক্রম নয়।
এবার দেখা যাক, আমাদের রাজ‍্যে, বিশেষতঃ কোলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে করোনা রোগীর এমন অকস্বাৎ বৃদ্ধির কারন কি। ‘অনুপ্রাণিত’ সংবাদ-মাধ‍্যম কখনোই এই বিশ্লেষণ করবে না। এর সবচেয়ে বড় কারনগুলির একটি হল উৎকট উল্লাসে সমস্ত কোভিড বাধানিষেধকে ছুঁড়ে ফেলে ‘উৎসব’ উদযাপন। দ্বিতীয় কারন অবশ‍্যই কোলকাতা পুরসভার সাম্প্রতিক নির্বাচন। পরিসংখ্যান দেখলে দেখা যাবে রাজ‍্যে সাম্প্রতিক মোট আক্রান্তের মধ‍্যে শতকরা ষাট-সত্তর ভাগ হচ্ছে কোলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায়। এই কঠিন সময় পুর নির্বাচনের কি বিশেষ প্রয়োজন ছিল? আবার বিধাননগর, শিলিগুড়ি, আসানসোল সহ কয়েকটি পুরসভার নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই নির্বাচন আর কয়েকদিন বাদে নির্ধারিত। প্রার্থীরা উৎকট দেশসেবার উদগ্র কামনায় যে কোভিড আচরণবিধি জলাঞ্জলি দেবেন তা আমাদের পূর্ব নির্বাচনের অভিজ্ঞতায় সবাই দেখেছি। নির্বাচন হবে – তবে কতো করোনার বলি চড়ানো হবে সেই আশঙ্কায় শঙ্কিত হচ্ছি।
আবার, গঙ্গাসাগরের মেলা ও পূণ‍্য সঙ্গমস্নান চলবে বলে সুপ্রিম ‘অনুপ্রেঢ়ণার’ আদেশে অনুপ্রাণিত প্রশাসন ঝাঁপিয়ে পড়েছে। কোন সুস্থ বোধবুদ্ধিতে এ রাজ‍্যে সমস্ত মেলা,খেলা,উৎসব, অনুষ্ঠানের ভিড় চলছে কে জানে! মনে হচ্ছে, প্রশাসন মস্তিষ্ক দিয়ে নয়, চলছে হৃদয়ের অনুপ্রেঢ়ণায়। এদিকে, কোভিডপ্রোটোকল মেনে এই সব করার কথা বলা হচ্ছে। আমাদের রাজ‍্যের মানুষজনের আচরণ দেখে মনে হয়, এ যেন যৌনকর্মীর কাছে কুমারীত্ব দাবী করা! পার্কস্ট্রীটের যে জনসমুদ্রের ছবি বিভিন্ন সংবাদ-মাধ‍্যমে দেখা গেছে তা কিন্তু পুরো অনুষ্ঠানের দিনগুলি জুড়েই চলেছে। প্রশাসন এই সবের বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ নিয়েছে সে সম্বন্ধে সংবাদ-মাধ‍্যমগুলির নিরবতা লক্ষ‍্যণীয়। অতএব, গঙ্গাসাগররের উৎসব-পার্বণের আনন্দ ও ভোট “খেলা” আরো দুটি বড় সংক্রমণের কারন হতে চলেছে।
একটা ব‍্যপার খুব অদ্ভুত লাগছে। পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক কর্মকান্ড বেগবতী পাহারী নদীর মত সতত প্রবহমান – এখানে কখনো লকডাউন করা যাবে না – যানবাহন ও রেল সম্পূর্ণ বন্ধ করা যাবে না – এসব করলে রাজ‍্যের ভঙ্গুর স্বাস্থ‍্যের অর্থনীতি যে ভেঙ্গে পড়বে সে বিষয় সবাই একমত। তাহলে উপায় কি? প্রচারবিহীন ‘অনুপ্রেঢ়ণা’ ও জলছাড়া মাছ একই রকম। সুতরাং রাজ‍্য প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ শুরু করল। কি? ইংল‍্যান্ড থেকে আসা বিমানের অবতরন এই রাজ‍্যে বন্ধ করা হল। কেমন অদ্ভুত নিষেধাজ্ঞা – কোন যাত্রী যদি ইংল‍্যান্ড থেকে দুবাই হয়ে কোলকাতায় আসে? যদি দুবাই না হয়ে ভারতের অন‍্য কোন এয়ারপোর্টে নেমে তার পর চেক-আউটের পরে দেশীয় উড়ানে কোলকাতায় আসে – তাদের ক্ষেত্রে কি ব‍্যবস্থা; এভাবে সংক্রমণ আটকানো যাবে কি? “pennywise pound foolish” – এই প্রবাদটা মনে পড়ল। যেসব দেশে খ্রীষ্টমাস ও নিউ ইয়ার উদযাপন সবচেয়ে বড় উৎসব সেখানে ওমিক্রন সংক্রমণ বিপুল হারে বাড়ছে। আমাদের রাজ‍্যে কিন্তু ওমিক্রনের থেকে ডেল্টা প্রজাতির সংক্রমণের সমস‍্যা অনেক বেশী। আর এই সমস‍্যার উদ্ভব যেমন উৎসব ও উদ্দাম আনন্দের মুক্ত-মিলনের কারনে গতি পেয়েছে, তেমনি নির্বাচনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকান্ডও এই বৃদ্ধির জন‍্য দায়ী। প্রশাসন রাজনৈতিক কর্মকান্ড পুরোপুরি বজায় রাখছে! রাস্থায় বেরিয়ে মানুষের কোভিডবিধি না মানার জন‍্য শাস্তির বিধানের প্রয়োগ ত বিশেষ করছেই না; পরন্তু প্রশাসনের মানষজনের মধ‍্যেও সামাজিক দূরত্ব না-মানা, থুতনি-মাস্ক পড়ে অফিসে কাজ করা – এইসব উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। একটা কথা সবাইকে জানানো হচ্ছেনা যে WHO জানিয়েছে, ওমিক্রণ একটি অতি সাধারন সংক্রমণ। এতে সরাসরি মৃত‍্যু হয় না (আগের একটি লেখায় তা বিশদে আলোচিত করা হয়েছে)। কিন্তু আমাদের রাজ‍্যে ত বাড়ছে করোনার সবচেয়ে ভয়াবহ ভ‍্যারিয়েন্টের সংক্রমণ।
প্রশাসনের আরেকটি ব‍্যর্থতার জায়গা অবশ‍্যই সব পানশালাসহ হোটেল, রেস্টুরেন্ট খুলে রাখা। ৫০% বুকিং-এর কথা বলা হলেও তার সঠিক পর্যবেক্ষণ ও স্টেপ নেওয়ার পরিকাঠামো রাজ‍্যসরকারের আছে কি? রাত বারোটায় উত্তর কোলকাতার যে রেস্তোরাঁ খুলে রাখা হয়েছিল এবং খাবার নিয়ে বচসার জেরে রেস্তোরাঁর লোকজনের হাতে খদ্দেরদের শারীরিকভাবে নিগৃহীত করার পর সেই রেস্তেরাঁর ঘটনায় কজন কি শাস্তি পেল তা কেউ জানে না। এ সব ঘটনা প্রশাসনের নিয়ম পালন করার নির্দেশকে বিদ্রুপ করে। আবার এই উৎসবের হাইপ তুলে বছরের শেষে মদের দোকান থেকে রেকর্ড পরিমাণ শুল্ক আদায় হলেও তার পরোক্ষ প্রভাব করোনা সংক্রমণের সংখ‍্যাবৃদ্ধিতে ইন্ধন জুগিয়েছে। সুতরাং শুধু ইংল‍্যান্ড থেকে আসা উড়ানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা মনেহয় বহ্বারম্ভে লঘুক্রিয়া হয়ে গেল। এভাবে করোনার সঙ্গেলড়াইয়ে এঁটে ওঠা যাবেনা। যদি সাধারণ মানুষকে কোভিডবিধি অক্ষরে অক্ষরে পালন করাতে বাধ‍্য করা না যায়, প্রশাসনের সেই ব‍্যর্থতার দায় কিন্তু ভুগতে হবে আমাদের সবাইকে – মূর্খস‍্য লাঠৌষধি।
আরেকটি কথা। রাজনৈতিক কর্মকান্ডসহ বিভিন্ন উৎসব চলতেই পারে। কিন্তু এই নিউ নর্মাল সময়ে তা নর্মালভাবে করা যাবে না। এই সহজ সরল কথাটা রাজনৈতিক নেতাদের বোঝা উচিৎ। রাজ‍্য নির্বাচন কমিশনারের উচিৎ এখুনি পুরনির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া। একটা কথা মনে পড়ল। সৌরভ গাঙ্গুলীর করোনা হয়েছে বলে সংবাদ-মাধ‍্যমগুলি প্রধান খবর হিসেবে রিপোর্ট করেছে। অথচ, তাঁর ভাইরাল লোড মাত্র সাড়ে উনিশ! করোন হলেও তা মার্জিনাল। শুধু এর জন‍্য সাধারণ মানুষজন কেউই হাসপাতালে ভর্তি হবেন না। অথচ জনসাধারনের মধ‍্যে করোনার বিপুল সংক্রমণ নিয়ে বৃহৎ সংবাদ-মাধ‍্যমগুলির কোন সদর্থক সংবাদ চোখে পড়ে না। অর্থাৎ, আমাদের দেশের গণতন্ত্রে সব মানুষ সমান হলেও কিছু মানুষের অবস্থান বিশেষে তারা উপরে! একই রকমভাবে প্রশাসন, বিচার-ব‍্যবস্থা ও সংবাদ-মাধ‍্যম যদি দেশের সব মানুষের ভালোর জন‍্য ভাবত, তবে হয়ত আজ এমন অবস্থা হত না। একটি কথা মনে রাখা প্রয়োজন। কোন অনুপ্রেঢ়ণায় প্রশাসন চলে না। প্রশাসনকে যুক্তি সহকারে আইনের পথে চলতে হয়। বিশেষ কারো ego satisfy করা প্রশাসনের সাজে না। কারন তাদের কাজের দায় পুরোটাই প্রশাসনের – কোন রাজনৈতিক নেতা বা মন্ত্রীর নয়। আমাদের সংবিধানের এই জায়গাটা বোধহয় শাসক ও শাসনকর্তারা জানেন না। তেমনি সাধারণ মানুষের, বিশেষতঃ বিভিন্ন ছোট ব‍্যবসায়ী ও অন‍্যান‍্য ‘দিন আনি দিন খাই’ মানুষের রুজিরোজগার যাতে সচল থাকে তা দেখার দায়িত্ব কিন্তু প্রশাসনের। সুতরাং ওমিক্রনের কল্পিত ভূতের ভয় না দেখিয়ে করোনার সংক্রমণ বন্ধ করার জন‍্য জনসাধারণকে কোভিড প্রোটোকল সঠিকভাবে মানতে বাধ‍্য করাতে হবে। এটা প্রশাসনের দায়িত্ব। সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে,রাজ‍্যের অর্থনীতি ও প্রান্তিক মানুষজনের রুজিরোজগার যাতে বন্ধ না হয়। সেকাজে ব‍্যর্থ হলে তা প্রশাসনেরই ব‍্যর্থতা। সেক্ষেত্রে অনুপ্রাণিত প্রশাসন কিনা তা বিচার্য নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *