পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা-প্রতিমন্ত্রী, উচ্চমাধ্যমিক পাশ, শ্রী পরেশ অধিকারী মহাশয়। তাঁর মেয়ের চাকরীর ক্ষেত্রে দুর্ণীতির গন্ধ থাকায় তদন্তের ভারপ্রাপ্ত সংস্থা (মহামাণ্য হাইকোর্টের নির্দেশ মোতাবেক) CBI তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকায় তিনি পদাতিক এক্সপ্রেসে কোলকাতায় আসার নাম করে মাঝপথে ‘হাওয়া’ হয়ে যান। তিনি শিক্ষা-প্রতিমন্ত্রী এবং তাঁর নিজের মেয়েকে স্কুল, শিক্ষা কমিশনের ইন্টারভিউ ব্যতিরেকে প্রথম স্থান দেওয়া হয় এবং তাঁর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী বাড়ির পাশের সরকার পোষিত স্কুলে পাকা চাকরীতে যোগ দেন! যে মেয়েটির যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরী পাওয়ার কথা সেই মেয়েটি, ববিতা বর্মণের মামলার ভিত্তিতে মহামাণ্য আদালত এই বিধান দেন। SSCর সদ্য প্রাক্তণ চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার হাইকোর্টে জানান, অঙ্কিতার মোট নম্বর ৬১ হওয়ায় সে ইন্টারভিউতে ডাক পায়নি! এদিকে ববিতা বর্মণের নম্বর ৬৯ হওয়ায় সে ইন্টারভিউতে ডাক পায় ও ইন্টারভিউতে ৮ নম্বর পেয়ে মোট ৭৭ নম্বর নিয়ে ওয়েট লিস্টে দ্বিতীয় হয়! প্রথম স্থানে ৬১ নম্বর পেয়ে ইন্টারভিউতে ডাক না পাওয়া অঙ্কিতা অধিকারী! মন্ত্রী মহোদয় আর কি করেন- যঃ পলায়তি সঃ জীবতি – নীতিতে পালালেন। হাইকোর্টে তাঁর যখন রক্ষা কবচ মিলল না তখন বাধ্য হয়ে গ্রেপ্তারীর ভয়ে তিনি পরদিন CBIএর জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হলেন! বামফ্রন্টের আমলে খাদ্য দপ্তর সামলেছেন – দুর্ণীতির অভিযোগ ছিল বিস্তর। তারপর হাওয়া মোড়গের দলবদলু অবস্থানে এখন তৃণমূলে। এহেন সংরক্ষিত জাতির নেতা এই শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর যোগ্যতা যা তাতে যিনি একে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বানিয়েছেন তাঁর শিক্ষা দপ্তর সম্পর্কে ধারনা নিয়ে সন্দেহ জাগা স্বাভাবিক। দলটির নাম তৃণমূল – যা বামফ্রন্টের বকলমে সিপিএমের উন্নততর(!) সংস্করণ।
যদি শিক্ষায় দুর্ণীতিকরণ দলের নীতি না হয়, তবে প্রাক্তণ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে দল কি অবস্থান নিচ্ছে – তাঁকে কি সমর্থন করছে না? বরং দলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, “পার্থদা দায়ী হলে আমরাও দায়ী” – তিনি বলতে চেয়েছেন যে, পার্থবাবুর কাজের দায়িত্ব যৌথভাবে সমগ্র মন্ত্রীসভার। খুব ভালো কথা। মহামাণ্য বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগ দুর্ণীতির অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় তাঁকে এবং পরেশ অধিকারীকে মন্ত্রীসভা থেকে সরানোর জন্য মূখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালকে ‘পরামর্শ’ দিয়েছেন। যে কোন মোটা মাথার দলীয় সমর্থক বলবেন যে মন্ত্রীসভায় মূখ্যমন্ত্রী কাকে রাখবেন আর কাকে সরাবেন তা তঁর এক্তিয়ারে পড়ে। শুধু তাদের মনে করিয়ে দিই, এর পরও যদি এই দুই কালিমালিপ্ত মন্ত্রীকে মূখ্যমন্ত্রী তাঁর মন্ত্রীসভায় বহাল রাখেন, জনাব ফিরহাদ হাকিমের কথার রেশ টেনে বলতেই হয় যে, এদের দপ্তরের দুর্ণীতির দায় পুরো মন্ত্রীসভার সঙ্গে সঙ্গে মূখ্যমন্ত্রীর উপরেও বর্তায়!
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগের তীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি মন্ত্রীত্বে থাকাকালীন SSC সহ বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক নিয়োগ ও অশিক্ষক কর্মচারী নিয়োগে pick and chose পদ্ধতিতে যেসব কমিটি তৈরী করেছিলেন এবং যেসব কর্মকর্তা চয়ন করেছিলেন, তাদের সকলের সঙ্গেই দুর্ণীতি চক্রের একাত্মতা – এসবই যে ‘পরম ব্রহ্ম’ থেকে উৎপত্তি – সেই তিনি হলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়! এক্ষেত্রে শিক্ষক নিয়োগ সহ গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগে পাহাড়প্রমাণ দুর্ণীতির প্রাথমিক প্রমাণ মহামাণ্য হাইকোর্টের নজরে এসেছে। আদালত নিযুক্ত অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে বাগ কমিটির রিপোর্ট অনুসারে ৩৮১ জন চাকরী প্রাপকের মধ্যে ২২২ জন পরীক্ষায় বসেনি! বাকী ১৫৯ জন নম্বরের নিরিখে যারা অকৃতকার্য হয়েছে তাদের তুলনায় অনেক কম নম্বর পাওয়া! কমিশনের লিস্টে নাম থাকলেও ৬৫০০ জন প্রাথমিকে চাকরী পায়নি! বাগ কমিটি চেয়ারম্যান শান্তিপ্রসাদ সিনহা, কল্যানময় গঙ্গোপাধ্যায় সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলার সুপারিশ করেছেন। এছাড়া বিভাগীয় তদন্তের সুপারিশ করা হয়েছে সুবীরেশ ভট্টাচার্য সহ শিক্ষা জগতের ৬ জন উচ্চস্থানীয় হাইপ্রোফাইল ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ৫৪২ জন বেআইনীভাবে নিযুক্ত গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মচারী(!)র বেতন বন্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রীকণ্যা অঙ্কিতা অধিকারীকে চাকরী থেকে বরখাস্ত করা ও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বেতন হিসেবে পাওয়া সমস্ত অর্থ সরকারকে ফেরৎ দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এসব অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তবু, দু কান কাটার মত এই দুই মন্ত্রীকে এখনো বহাল রাখার অর্থ হচ্ছে এদের দুর্ণীতিতে দল ও রাজ্য সরকারের শিলমোহর প্রদান।
প্রথমে যখন পরেশ অধিকারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হল তখনই তিনি “ঠাকুর ঘরে কে”, “আমি কলা খাইনি” গোছের কাজ করলেন – অর্থাৎ আপীলে জেতার আশায় মেয়েকে নিয়ে পালালেন। এতে ওর মোটিভ পরিষ্কার হল। তেমনি, পার্থবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হলেও তিনি উচ্চতর ও উচ্চতম আদালতে চেষ্টা চালালেন তা বানচাল করতে! তিনি যদি নির্দোষ হন ত ভয়টা কিসের! তিনি কি নিজেকে দোষী বলে জানেন বলেই এতগুলো যোগ্য ছেলেমেয়ের চাকরী না দিয়ে কোটি কোটি টাকা ঘুষ নেওয়া মানুষগুলোর বিচারের রাস্তায় কাঁটা বিছাতে চাইছেন!
যদিও এই গুণধর মন্ত্রীদ্বয়কে মন্ত্রীসভায় রেখে দিতে মূখ্যমন্ত্রীর কোন আইনী অসুবিধা নেই; যদি শেষমেশ এদের দুর্ণীতি প্রমাণিত হয়, তখন মহামাণ্য আদালত মূখ্যমন্ত্রীসহ মন্ত্রীসভার বিরুদ্ধে কোন আদেশ দিলে তা মানতে প্রশাসন বাধ্য। ভোটে জিতে যা খুশী তাই করা যায় না – নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে কাজ করতে হয় – এ শিক্ষা রাজনীতিকরা কবে নেবেন? তৃণমূল দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, “দল তার পাশে নেই”! এদিকে পরেশবাবু এখনো মন্ত্রীসভার সদস্য! এমন দ্বিচারিতা “অনুপ্রাণিত” দলের পক্ষেই সম্ভব। এখানে একটি ব্যাপার মনে রাখা দরকার – সংবাদ-মাধ্যমের প্রতিক্রিয়ার যেমন আইনী গুরুত্ব নেই, তেমনি কোন মন্ত্রী, এমনকি মূখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেঢ়নায় প্রশাসন চলে না। প্রশাসন চলে প্রশাসনের কর্তা বা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধানদের নির্দেশে – যার সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছেন মূখ্য সচিব। তিনি আদালতের আদেশ মানতে বাধ্য। কোন অশিক্ষিত বা অর্ধশিক্ষিত মানুষ অনুপ্রাণিত হয়ে কিছু করতে পারেন না। মন্ত্রীরা (মূখ্যমন্ত্রীসহ) নীতি নির্ধারণ করেন। তবে তা পালন করার দায় বিভাগীয় সচিবদের। সেজন্য এই মন্ত্রীদ্বয়কে যদি আদালতের আদেশে সরাতে বাধ্য হয়, তার প্রেক্ষাপট তৈরীর জন্য দল তার পাশে নেই – ধরনের কথা বলতে হচ্ছে!
জনমানসে যে ব্যাপারগুলি ঘুরপাক খাচ্ছে তা হল, পরীক্ষা নিয়ে মেধার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগের প্রতিষ্ঠিত আইনী পদ্ধতিকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে টাকা ও পরিচিতির (এক্ষেত্রে মন্ত্রীর মেয়ে ধরা পরেছে) মাধ্যমে নিয়োগ হয়েছে যেখানে মেধার কোন মূল্য নেই! বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি ছাত্রভর্তিতে শাসকদলের ছাত্র নামধারী মাসলম্যানদের দৌরাত্ম ও টাকা নিয়ে ভর্তির অভিযোগ করছে তার সারবত্তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন। এমনকি শিক্ষকদের বদলীর ক্ষেত্রে যে মোটা টাকার হাতবদল হয় বলে অভিযোগ তা এসবের পরে গতি পেল। আবার, মুদ্দোফরাস দিয়ে যে শল্য চিকিৎসা হয় না তা সাধারন মানুষ জানলেও, রাজ্য সরকারের বোধহয় অজানা! শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু শিক্ষিত, নামী নাট্টব্যক্তিত্ব ও ভদ্রলোক। কিন্তু মুশকিল হল, রাজ্যের সব দপ্তর ‘অনুপ্রেঢ়না’য় চলে! গরমের কারনে রাজ্যে অভূতপূর্ব আদেশে শ্রেণীকক্ষে পঠনপাঠন লম্বা সময়ের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হল! তার পর বর্ষা নামায় গরম অনেক কমলেও শ্রেণীকক্ষে পঠনপাঠন বন্ধই রইল! মনে হয়, এই রাজ্যে অনুপ্রানিত শিক্ষাদপ্তরের কাজ হচ্ছে কি অজুহাতে কত বেশী শ্রেণীকক্ষে শিক্ষাদান বন্ধ রাখা যায়। এদিকে বিপুল সংখ্যক দুর্ণীতির মাধ্যমে শিক্ষক নিযুক্ত হওয়া মানুষরা স্বাভাবিক কারনেই পঠনপাঠনের গঙ্গাজলী যাত্রায় খুশী হবে! শিক্ষাদপ্তর থেকে যত রকমে পারা যায়, অবৈধ অর্থ তোলার জন্যই কি এই দপ্তর খুলে রাখা হয়েছে?
বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ইউনিয়নের নামে দাদাগিরি এমনপর্যায়ে গেছে যে শিক্ষকদের অপমান করা ত সাধারণ ব্যাপার – গায়ে হাত তুলতেও তারা পিছপা হয় না! তাদের দাবীগুলির মধ্যে আছে, ভর্তির সময় তাদের ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে মোটা ‘তোলা’ আদায়ের অধিকার অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে! অনলাইন পরীক্ষার সময় অবাধে টোকা যায় বলে অনলাইন পরীক্ষা বহাল রাখতে হবে! পরীক্ষায় পাশ করানো বাধ্যতামূলক – নইলেই জঙ্গী আন্দোলন; আর ক্লাশ না করলেও ফাইনাল পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিতে হবে ইত্যাদি! এদিকে ছাত্র ইউনিয়নের দৌরাত্মের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দলের বশংবদ শিক্ষক ইউনিয়নের দৌরাত্মও! এইসব শিক্ষক নেতাদের মধ্যে একাধিক নেতার নামে অভিযোগ আছে চাকরী দুর্ণীতি ও বদলী দুর্ণীতিতে সরাসরি যোগাযোগের! পালের গোদা – প্রাক্তণ শিক্ষামন্ত্রী নামের আগে ডঃ লেখেন – তিনি পিএইচডি ডিগ্রিপ্রাপ্ত। তাঁর পিএইচডির থিসিসটি প্লেজিয়ারিজমের দায়ে অভিযুক্ত! তিনি অন্যের গবেষণা ‘টুকে’ এই ডিগ্রি পেয়েছেন বলে অভিযোগ। মোদ্দা কথা, রাজ্যের পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাটাই চুরি ও দুর্ণীতির দপ্তরে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ। দুর্ণীতির গণতন্ত্রীকরণ রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরের একমাত্র সাফল্য! দলীয় আনুগত্য ও বেআইনী আর্থিক লেনদেন যদি শিক্ষকতার অন্যতম যোগ্যতা হয়, তাহলে এমন পরিবেশ দেখাই ত স্বাভাবিক।
আবার, রাজ্যের উন্নয়ণের জোয়ার এমন যে তা শিক্ষা ক্ষেত্রকেও নাকি ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে! শিক্ষার প্রসার বলতে আমরা, অর্থাৎ রাজ্যের অনুপ্রাণিত জনগণ কয়েকটি বিশেষ জিনিষ বুঝি – রাজ্যজুড়ে, এমনকি প্রত্যন্ত এলাকায়, যেখানে ছাত্র-ছাত্রী পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম, সেখানেও শিক্ষাঙ্গন খোলার নামে বড় বড় বাড়ি তৈরী করা হয়েছে। বিশ্বখ্যাত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে ‘বিশ্ববঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়’ খোলার নামে বহু কোটি টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন বাড়ির সারি তৈরী করে একটি বড়সড় রিসর্ট উপনিবেশের মত তৈরী করা হয়েছে! ব্যস – ঐ পর্যন্তই! বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় যে বাড়ি বানালেই তৈরী হয়ে যায় তা আমরা এই প্রথম জানলাম! নতুনগুলি ত দুরস্ত্, পুরোনো শিক্ষায়তনগুলির ইনফ্রাস্ট্রাকচারের অবস্থাও শোচনীয়। রাজ্যের “লক্ষ্মীর ভান্ডার” রমরমিয়ে চললেও সরস্বতীর ভান্ডারের ভাঁড়ে মা ভবানী! যেহেতু শিক্ষাঙ্গন চালানোর জন্য তার ইনফ্রাস্ট্রাকচার তৈরী এবং শিক্ষক-ছাত্র অনুপাতে উপযুক্ত শিক্ষক নিয়োগ শিক্ষা দপ্তরের এক্তিয়ারে পড়ে – সেকাজে রাজ্য সরকারের “অনুপ্রেঢ়না” না থাকায়, শিক্ষক নিয়োগের নামে আর্থিক দুর্ণীতি থেকে ধরে শিক্ষক নিয়োগ মানের জলাঞ্জলী দেওয়া শিক্ষা ধ্বংসের নীতিকেই রূপায়িত করে! উচ্চতর শিক্ষার ক্ষেত্রে সিভিক পুলিশের মত কিছু তাঁবেদার যোগ্যতাহীণ দলদাস নিয়োগের ফর্মূলা প্রয়োগ করে বিভিন্ন গালভরা নাম দিয়ে ‘সিভিক শিক্ষক’ নিয়োগ এখন রাজ্যের শিক্ষানীতির অঙ্গ! ‘ছাত্র’ নামের হিংস্র দলীয় কর্মীদের ‘আন্দোলন’ এখন তোলাবাজদেরও হার মানায়।
দুর্ণীতি এবং টেকনিক্যাল জ্ঞানরহিত ‘অনুপ্রানিত’ সরকারের ‘অনুপ্রানিত’ শিক্ষা দপ্তর একদম বেআব্রু হয়ে পড়েছে। পরিশেষে বলি, শিক্ষার অবমূল্যায়ন বাম আমলে শুরু হলেও শিক্ষার সর্বাঙ্গে ক্ষতের মত দুর্ণীতির গণতন্ত্রীকরন হয়েছে বর্তমান রাজ্য সরকারের আমলেই। আবার, এই দুর্ণীতিকে জনসমক্ষে আনার জন্য যেমন মহামান্য আদালতের অবদান আছে, তেমনি অবদান আছে বাম যুবশক্তি এবং তাদের আইনজীবীদের। আশ্চর্য হয়ে যাই, যখন দেখি প্রধান বিরোধী দল বিজেপি এমন ইস্যুতেও যুবমোর্চার কিছু বিক্ষিপ্ত আন্দোলনছাড়া কিছুই করছে না! শুধু সোশ্যাল মাধ্যমে বিদ্রুপ করেই তাদের আন্দোলন শেষ! জানিনা, বহুল প্রচারিত ‘সেটিং তত্ত্ব’ এর কারন কিনা। আমরা ভবিষ্যতের আশায় রইলাম।
পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা দপ্তরের গঙ্গাজলী যাত্রা
