পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব‍্যবস্থা ধ্বংসের মূলে
রাজনৈতিক অসততা

পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাক্ষেত্রে চরম নৈরাজ‍্য চলছে। প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা – সব স্তরেই শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি ও আর্থিক উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ উঠছে। বেআইনী নিয়োগের ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের রায় – যা সরকার চেষ্টা করেও আটকাতে পারেনি – তা সরকারের বিপক্ষে গেছে। শুধুমাত্র এটুকু হলে বলা যেত বিক্ষিপ্ত ঘটনা বা মুষ্ঠিমেয় ব‍্যক্তির দুর্নীতি ! কিন্তু না, শিক্ষাজগতের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতির ফলে পুরো সিষ্টেমেই পচন ধরেছে।ভুয়ো শিক্ষক ও “সিভিক” শিক্ষকরা শিক্ষাদানের ফলে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ‍্যেও তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। এর চেয়েও বড় কথা হল, শিক্ষার প্রতিটি স্তরের প্রতি পর্যায়ে যে দুর্নীতি বাসা বেঁধেছে, তা সরকারে থাকা রাজনৈতিক দলের সমর্থন, বিশেষতঃ, “অনুপ্রেঢ়না” ছাড়া কখনোই সম্ভব নয়। দুর্নীতির বিভিন্ন পর্যায় ভালোভাবে অনুধাবন করলে বোঝা যায় যে, শিক্ষা দপ্তর থেকে অর্থ আত্মসাৎ করা এবং শিক্ষার নামে শিক্ষাদানের গঙ্গাজলী যাত্রা করা হয়েছে উদ্দেশ‍্যপ্রণোদিতভাবে। একাজে সুনিপুণভাবে অতিমারীর সুযোগ নেওয়া হয়েছে।
এই সরকার ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসে “অনুপ্রেঢ়না” পেয়ে নতুন নতুন বিদ‍্যায়তন, মহাবিদ‍্যালয়, এমনকি বিশ্ববিদ‍্যালয় খুলে শিক্ষার বিস্তারের ঢক্কানিনাদ শুরু করল! আসলে, বিভিন্ন ঠিকাদাররা নির্মাণকাজ শুরু করে – আর এইসব নির্মাণে সরকারী কোষাগার হাল্কা হলেও শিক্ষার কোন উন্নতি হয় না। অবশ‍্য দুর্জনে বলে, এর ফলে ঠিকাদারদের মাধ‍্যমে বিশেষ ঘরে লক্ষ্মী আসতে থাকে! বাড়ি তৈরী হলেই “শিক্ষাঙ্গন চালু হল” বলে বশংবদ সংবাদ-মাধ‍্যমগুলির হুক্কাহুয়া রবে প্রথমে কিছু মানুষ বিভ্রান্ত হলেও পরে বোঝা গেল সব ফক্কা – কারন, কোথাও ঠিকমত অবকাঠামো (infrastructure) তৈরী হল না! নির্মানকার্যের চারগুণেরও বেশী অর্থ প্রয়োজন হয় যথার্থ অবকাঠামো তৈরীর জন‍্য। সেই টাকার সংস্থান (budgetory allocation) কখনো করা হয়নি। এভাবে সরকারী কোষাগার শূণ‍্য হলেও আখেরে শিক্ষার কোন উন্নতি হয়নি। বিজ্ঞান বিভাগের ল‍্যাবোরেটরীর খরচ অনেক বেশী; তাই চাহিদা থাকলেও অনেক জায়গায় বিজ্ঞান বিভাগ খোলাই হয়নি। শিক্ষক নিয়োগে হয়ত ব‍্যক্তিগত পর্যায়ে কিছু লোকের লাভ হয়েছে, কিন্তু, বিভিন্ন পর্যায়ে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ করা হল – যেখানে নিঃসন্দেহে শিক্ষকের ও শিক্ষার অবমূল‍্যায়ন হল। এইসব শিক্ষকের অনেকেরই পড়ানোর নূন‍্যতম যোগ‍্যতা নেই আর এদের বেতন সরকারের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী, যেমন, পিওন, ঝাড়ুদার ইত‍্যাদির থেকেও কম। চুক্তিভিত্তিক হওয়ায় এদের চাকরীর স্থিরতাও নেই! একটা উদাহরণ দিই – মহাবিদ‍্যালয়ে স্নাতক, এমনকি স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়ানোর জন‍্য মাসিক পাঁচ হাজার টাকা মাইনের শিক্ষকও নিযুক্ত করা হল! জানিনা এক্ষেত্রে ‘কাটমাণি’ কত দিতে হয়! এমন বিদ‍্যায়তনও আছে, যেখানে সবেধন নীলমণি ‘মাস্টার’, যিনি সব শ্রেণীর একসঙ্গে পাঠদান করেন, তিনিই মিড-ডে-মিলের তত্বাবধায়ক, তিনিই করনিক থেকে পিওন, এমনকি ঝাড়ুদার কাম দারোয়ান! এই আমাদের অনুপ্রাণিত শিক্ষার মডেল!
উৎকোচ বা কাটমানি দিয়ে চাকরী পাওয়া শিক্ষকরা আর যাই করুন, ছাত্রদের ঠিকমত শিক্ষা দিতে অপারগ – সেকথা একমাত্র অনুপ্রাণিত সরকার ও তার আমলারা ছাড়া রাজ‍্যের অন‍্য সব মানুষই জানেন। ফলে, শিক্ষিত (!) ছাত্র-ছাত্রী রাজ‍্যে তৈরী হতে লাগল! আমরা রাজ‍্যের উচ্চতম নীতি নির্ধারকের কাল্পনিক বিশ্ববিদ‍্যালয় – ইস্টজর্জিয়া ইউনিভার্সিটির ডক্টরেটের কথা যেমন জানি, তেমনি রাজ‍্যের পায়াভারী মন্ত্রী, যিনি কিছুদিন আগে পর্যন্ত শিক্ষা দপ্তর সামলেছেন, তাঁর ডক্টরেট ডিগ্রির থিসিস টোকার দায়ে (plagiarism) অভিযুক্ত, সেকথাও জানি। এমন কুম্ভীলকবৃত্তির মানুষরা যদি রাজ‍্যের শিক্ষা দপ্তরের কাজকর্মে ছড়ি ঘোরান, তাহলে সেই দপ্তরের কি অবস্থা হতে পারে তা ভেবেই মানুষ শিহরিত হচ্ছে।
এভাবে যে বিষবৃক্ষ রোপন করা হল, এখন তার ফল ফলতে শুরু করেছে। এই শিক্ষায় শিক্ষিত ছাত্ররা বিভিন্ন বিশ্ব রেকর্ড(!) করছে। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তণ ছাত্র ও তৃণমূল দলের নেতা গিয়াসউদ্দিন মন্ডল তার সাঙ্গোপাঙ্গো সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ঘরে ঢুকে তাঁকে ঘিরে ধরে অশ্রাব‍্য গালিগালাজ ও মারধোর করে – এমন ঘটনার ভিডিও প্রকাশ হওয়ায় পুলিশ গিয়াসউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করতে বাধ‍্য হলেও এখনো আমরা জানি না তার কোন শাস্তি হল কিনা। আবার বেকায়দায় পরে তৃণমূল দল জানিয়েছিল যে, গিয়াসউদ্দিন তাদের দল থেকে বহিস্কৃত – অর্থাৎ তারা স্বীকার করে নিল যে, এই নেতা তাদের দলেই ছিল। এমনই বহু রত্নের সমাহার শাসকদলের ছাত্রকুলে! ছাত্রভর্তির সময় বিভিন্ন মহাবিদ‍্যালয়ে শাসকদলের ‘ছাত্রনেতা’দের কন্ট্রোলে ছাত্রভর্তির পদ্ধতি চলে। কলেজ প্রশাসন ও অধ‍্যক্ষ এদের অঙ্গুলীহেলনে চলতে বাধ‍্য হন। এখানেও ভুক্তভোগীমাত্রই জানেন, ছাত্রভর্তির সময় মেধা নয়, টাকার বিনিময় ব‍্যবস্থা প্রাধান‍্য পায়। অনেক হৈচৈ হলেও, বছরের পর বছর অনলাইনে ভর্তির পদ্ধতি এই রাজ‍্যে চালু করা হয়নি। পরে যখন তীব্র সমালোচনার চাপে সরকার সাম্প্রতিককালে অনলাইনের মাধ‍্যমে সম্পূর্ণ ভর্তি প্রক্রিয়া চালু করল, তারপর থেকে পরীক্ষাটাকেই হাস‍্যকর করে তোলা হল। কিভাবে? প্রথমে অর্ধেক পরীক্ষা নিয়ে, অতিমারীর অজুহাতে বাকি অর্ধেক পরীক্ষার তথাকথিত গড় নম্বরের নামে মনগড়া বিশাল নম্বর দিয়ে পরীক্ষা ব‍্যবস্থাকেই প্রহসনে পরিণত করা হল। না জেনে এবং না পড়েও বিশাল নম্বর পাওয়ায় ছাত্র-ছাত্রীরা খুশী হল। তাদের অভিভাবকেরা উজবুকের মত আনন্দে মিষ্টি খাওয়ালেন! তারপর দেখা গেল, এত বিশাল নম্বরেও মহাবিদ‍্যালয়ে ভর্তি হওয়া যাচ্ছে না! সবাই ত ঝুড়িঝুড়ি নম্বর পেয়েছে – মুড়ি মিছরি এক দর! সুতরাং, সেই ভর্তি প্রক্রিয়ায় চোরা পথ ও অর্থদন্ড….। এবার এই নেতিবাচক শিক্ষানীতির পর্যালোচনা করা যাক।
আগে একাধিকবার লিখেছি, আমাদের রাজ‍্যে অনলাইনে পড়াশুনা ভাঁওতা ছাড়া আর কিছু নয়। অতিমারীর সময় দুবছর পড়াশুনা বন্ধ ছিল। শ্রেণীকক্ষে শিক্ষাদানের বদলে অনলাইন পড়াশুনার স্মার্ট ক্লাস ও ই-লার্নিং পদ্ধতির সঙ্গে রাজ‍্যের স্কুলশিক্ষা ত দুরের কথা, উচ্চশিক্ষায় ৯০% এর বেশী ছাত্র-ছাত্রী পরিচিত নয়। এমনকি অধিকাংশ শিক্ষকেরও এই ব‍্যবস্থায় মানিয়ে নিতে অসুবিধা আছে। তাছাড়া, রাজ‍্যের অভিভাবকদের আর্থিক অবস্থা, বিদ‍্যায়তনগুলির অবকাঠামো এমন নয় যে, ই-লার্নিং সেখান থেকে সুষ্ঠুভাবে চলতে পারে। এর অবিসংবাদী ফল হল, দু বছর কোন রকম লেখাপড়া নেই; অথচ মারাত্মক ক্ষতি হয়ে গেল, অনলাইন পরীক্ষার নামে টুকে পরীক্ষার পদ্ধতি (সহযোগী বা অভিভাবকের সহযোগীতায়) এবং পরীক্ষার মূল‍্যায়নের নামে প্রহসন শুরু হওয়ায়! কিছু না পড়ে এবং না জেনে উচ্চমানের নম্বরসহ ছাত্র-ছাত্রীদের পাশ করানোয় রাজনৈতিক তুষ্টিকরন হলেও সমাজ কয়েকটি অপুরনীয় ক্ষতির মুখে পড়ল। প্রথম, ক্লাস সিক্সে পড়ার শুরু থেকে কিছু না পড়ে দু বছর বাদে ক্লাস এইটের পড়া বোঝা কারোর কম্মো নয়! সময় দিয়ে ধীরে ধীরে আরো কয়েক বছরের সরকার ও শিক্ষক-অভিভাবকদের সম্মিলিত চেষ্টায় এই অসুবিধা দূর হতে পারত। সরকার সেই রাস্তায় না হেঁটে, রাজনৈতিক জনপ্রিয়তা বজায় রাখায় শর্টকাট পথে না গিয়ে এবং পাঠ‍্যক্রম ও পঠন পদ্ধতির পরিবর্তন না করে পরীক্ষার নামে ধ‍্যাষ্টামো করা হল। অন‍্যায‍্যভাবে নম্বর বাড়ানোর প্রক্রিয়া গণতন্ত্রীকরণ করা হল! এর ফলে, ছাত্র-ছাত্রী ত বটেই, তাদের অভিভাবকদের মনেও অহংকার ও পড়াশোনা না করেও নম্বর পাওয়ার অধিকার জন্মাল!
অতিমারী শেষ হওয়ার পর যখন শ্রেণীকক্ষে পঠন-পাঠন শুরু হল, তখন আবার ধীরে ধীরে সেই পদ্ধতি – লেখাপড়া করার বিরুদ্ধেই প্রতিবাদের ছুতো খোঁজা শুরু হল। সরকারের এমন “অনুপ্রাণিত” সিদ্ধান্তের ফলে যে প‍্যানিক বাটন দাবানো হল, তার ফলে সাধারণ জনগণও বুঝে ফেলল যে, এই সরকার শিক্ষাদানের দায়িত্ব না নিয়ে বিভিন্ন ছুতোনাতায় স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার যোজনা করছে। এরা যেভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের মূল‍্যায়ণ করছে তাতে তারা খুশী হলেও রাজ‍্যের শিক্ষার সামগ্রিক অবমূল‍্যায়নের ছবি রাজ‍্যের বাইরের মানুষদের কাছেও পরিষ্কার হয়ে গেল। এরমধ‍্যে উচ্চশিক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীরা অনলাইন পরীক্ষার সুযোগে টুকে পরীক্ষা দেওয়ার যে গণতান্ত্রিক (!) অধিকার গত দু বছরে অর্জন করেছে, তা ছাড়তে তারা স্বাভাবিকভাবেই রাজী নয়। এমনিতেই রাজ‍্যের উচ্চশিক্ষার হাল সর্বজনবিদিত; তার উপর অনলাইনের পরীক্ষা পদ্ধতির নেপথ‍্য কারন সবার জানা। কাজেই সরকার পরীক্ষার নিয়ম বদল করে পুরোনো অফ লাইন পরীক্ষা ফিরিয়ে আনার উদ্দোগ নিল। রাজ‍্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা সরকারী অনুপ্রেঢ়নার তল্পিবাহক হয়ে কাজ করেন বলে এ ব‍্যপারে তাদের আলাদা কোন বক্তব‍্য থাকল না। শিক্ষাব‍্যবস্থায় অশিক্ষার অনুপ্রেঢ়না যেভাবে ফল্গুধারায় প্রবাহিত হয়ে চলেছে, তাতে এর সদগতি আরো ত্বরান্বিত হচ্ছে মাত্র। কারন, উচ্চশিক্ষায় নম্বর পাওয়ার সামাজিক দায়বদ্ধতা ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে অন‍্যদেরও আছে। এরা গাঁটের কড়ি খরচ করে (কাটমাণি বাবদ) ভর্তি হয়েছে – এদের বদ্ধমূল ধারণা দেওয়া হয়েছে যে ভর্তি হলেই ঝুড়িঝুড়ি নম্বর সহ পাশ করানোটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার! আবার রাজ‍্যে মেধার ভিত্তিতে চাকরীর সুযোগ না থাকায় এই ছাত্র-ছাত্রীদের চাকরীক্ষেত্রে মেধার মূল‍্যায়ণ হচ্ছে না। এরাজ‍্যের বর্তমান পরিস্থিতি হচ্ছে, কাটমাণিযোগে সরকার ও সরকারপোষিত সংস্থায় চাকরীর দরজা খোলে – সেখানে মেধার প্রয়োজন নেই। সে কারনে সরকার তথা শাসকদলও হয়ত চাইছে মেধা বিকাশের খরচসাধ‍্য ও শ্রমসাধ‍্য পদ্ধতি জলাঞ্জলী দিয়ে কম খরচে বিনা ঝামেলায় স্ফীত মার্কশিট ধরিয়ে দিয়ে শিক্ষার দায় মেটানোর!
এইভাবে দুবছর অতিক্রান্ত হওয়ায় শিক্ষা ব‍্যবস্থায় যে বাৎসরিক ক্রমোন্নয়ণ পদ্ধতি চালু ছিল তা নষ্ট হয়ে গেল। বিদ‍্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষার মূল‍্যায়ণ সম্পর্কে নিশ্চিন্ততার উচ্চ ধারনা জন্মালো। ২০২২ সালের মাধ‍্যমিক ও উচ্চমাধ‍্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর আমরা এই ধারনার বহিঃপ্রকাশ দেখলাম। সরকারী মদতে শিক্ষায় দুর্নীতির সর্বব‍্যাপী প্রভাবে বশীভুত শিক্ষক সমাজের একাংশ দুর্নীতির সুযোগ গ্রহণ করল। এমন অনেক স্কুল “হোমসেন্টার”-এর সুযোগ নিয়ে মেধা তালিকায় নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব (অন‍্য কথায় দৌরাত্ম) জাহির করল। আবার অনেক ভালো স্কুল, যেমন রামকৃষ্ণ মিশনের অধীনে থাকা স্কুলগুলি, মেধা তালিকায় পিছিয়ে গেল। নৈতিকতার বিনাশের সঙ্গেসঙ্গে শিক্ষার বিনাশের পথ তৈরী হল। এই পরিস্থিতিতেও যেসব ছাত্র-ছাত্রী ফেল করল, তারা রাস্তা অবরোধসহ আন্দোলন শুরু করল আর আমাদের রাজ‍্যের সংবাদ-মাধ‍্যম সেসব প্রচার করতে লাগল! সংবাদে দেখলাম, এক ছাত্রী বলছে তারা রাষ্ট্রবিজ্ঞানে লেটার পেলেও ইংরাজীতে “ফেল” করেছে। সাংবাদিকের একজন তাকে umbrella বানান জিজ্ঞেস করায় সে প্রথমে বিরক্ত হলেও পরে উত্তর দিল, “amrela”!সেখানে একজন অভিভাবিকা জানালেন, যারা স্মার্টফোনে বাংলায় মেসেজ করে তারা ইংরাজীতে পাশ করলেও তাঁর মেয়ে ইংরাজীতে মেসেজ করে, তাই তাকে ইংরাজীতে ফেল করানো চলবে না- পাশ করাতে হবে! এতেই বোঝা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের অনুপ্রাণিত শিক্ষা ব‍্যবস্থা কোথায় গেছে।
পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব‍্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস হওয়ার জলছবি দেখে সাধারন মানুষ আঁতকে উঠলেও “অনুপ্রেঢ়না” ও “অনুপ্রাণিত সরকার” খুশী! কারন, ডাক্তারের বদলে মুদ্দোফরাস দিয়ে মানুষের চিকিৎসা করলে যা হয়, জালি বা টোকা পিএইচডিরা যখন শিক্ষা জগৎ পরিচালনা করেন, তখন এইভাবেই শিক্ষার চিকিৎসা হয়! শুধু, মাঝখান থেকে রোগীমৃত‍্যু স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়।
এখন সময় এসেছে, পশ্চিমবঙ্গের অভিভাবকদের ভাবতে হবে, তাদের সন্তানরা “ভাতাজীবি” হয়ে কুকুরের মত বাঁচবে নাকি যথার্থ শিক্ষায় শিক্ষিত হবে। ভাবনা ও দায়িত্ব দুইই রাজ‍্যের জনগণের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *