ভারতীয় উপমহাদেশের পরিস্থিতি কতটা উত্তপ্ত,ভারত কোন প্রতিবেশীর সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে কি হবে – এমন সব প্রশ্নের উত্তর ইদানিং মানুষ চাইছে – এমনকি এই অভাজনের কাছেও। এই বিষয়ে বহু বিশেষজ্ঞ আছেন; তাঁরা অনেককিছু বিশ্লেষণ করে গুরুগম্ভীর উত্তর দেন – যা এটাও হয়, ওটাও হয় গোছের! এ যেন জ্যোতিষীর হস্তরেখা বিচার – রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মোড়কে!
এখানে পরিস্থিতি ও পারিপার্শিকতা বিচার করে সাধারণ মানুষের চিন্তা-ভাবনা তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রথমেই যেটা বলা দরকার তা হল, এই উপমহাদেশে satellite রাষ্ট্র নেপাল ও ভুটানের ভৌগলিক অবস্থান এবং সমরশক্তি এমন নয় যে, তারা ভারতের পক্ষে কোন বড় বিপদ হতে পারে। বরঞ্চ দুই শক্তিশালী রাষ্ট্র চীন ও ভারতের মধ্যে buffer states হিসাবে যুদ্ধের উত্তেজনা প্রশমনের কাজে লাগতে পারে – যেমন, এক সময় সাবেক USSR ও চীনের মধ্যে buffer state হিসাবে মঙ্গোলিয়ার ভূমিকা ছিল। এখনো এই ধরনের রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয়তা আছে। বাকী রইল শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও পাক-ই-স্তান।
এই তিন দেশের দুর্বল অর্থনীতির সুযোগ নিয়ে চীন তাদের অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে ভারত-বিরোধী কাজের প্ররোচনা দিচ্ছে। এইভাবে তিন দেশেই সরকারকে এরা ঋণের ফাঁদে জড়িয়ে ভারতের বিরুদ্ধে নাশকতামূলক কাজে অথবা বিভিন্ন অজুহাতে বিদ্বেষ ছড়িয়ে ভারতের অভ্যন্তরে অস্থিরতা তৈরী করতে চাইছে বলে অভিযোগ। অর্থাৎ চীন সরাসরি ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামছে না – অন্য দেশের সাহায্যে ভারতের অভ্যন্তরে এবং সীমান্তে অস্থিরতা তৈরীতে মদত দিচ্ছে। চীনের আভ্যন্তরীন সমস্যা এবং অর্থনৈতিক স্থিতি বিচার করলে তাদের দেশের বিস্তারধর্মী রাজনৈতিক নেতৃত্বের পক্ষে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে না নামার কোন কারন নেই। তবু, গালওয়ান পরবর্তী ঘটনা-প্রবাহ প্রমাণ করে, চীন উপযাচক হয়ে ভারত আক্রমণের ঝুঁকি নেবে না।
এর কারন খুঁজতে গেলে আমাদের বর্তমানে চলা রাশিয়া – ইউক্রেন যুদ্ধের দিকে তাকাতে হবে। গত আট মাস ধরে চলা এই যুদ্ধের শুরুতে রাশিয়ার বাহিনী দ্রুত ইউক্রেনের ভিতরে প্রবেশ করতে পারলেও যত সময় গড়িয়েছে, ইউক্রেন ততই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। হ্যাঁ, একথা ঠিক যে আমেরিকা সহ পশ্চিমী দেশগুলি, বিশেষতঃ ন্যাটো-শক্তি ইউক্রেনকে অস্ত্রশস্ত্রসহ গোলাগুলি ও আনুসঙ্গিক সমরাস্ত্র দিয়ে সাহায্য করছে। কিন্তু লড়াইয়ের ময়দানে উন্নততর ও আধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত রাশিয়ার বাহিনীর সঙ্গে লড়তে হচ্ছে শুধুমাত্র ইউক্রেনীয়দের। এভাবে সময়ের সাথে সাথে অসম যুদ্ধে ইউক্রেনের পাল্লা দিয়ে লড়াই দেওয়ার মধ্যে যুদ্ধের একটি স্বতঃসিদ্ধ নিয়মের কথা উল্লেখ করা দরকার। সেই রামায়ণ, মহাভারতের সময় থেকে সব যুদ্ধের ফলাফল একই নিয়মে নির্ণীত হয়েছে। তা’হল আদর্শ বা বাঁচার জন্য লড়াইয়ের বিরুদ্ধে পেশাগত কারনে আদর্শহীণতার লড়াইয়ে সর্বদা প্রথম পক্ষের জয়। প্রশ্ন থাকতে পারে, ভারতের বুকে ইসলামী শক্তির জয় নিয়ে – এখানে লক্ষ্য করলে বোঝা যায়, ইসলামী শক্তি তাদের বিস্তারমূলক ধর্মীয় আগ্রাসনের আদর্শকে সামনে রেখে ভারতে তাদের জয় হাসিল করে। পক্ষান্তরে পরাজিত শক্তির ধর্মীয় উগ্রতা না থাকায় তারা লড়াই জেতার জন্য অতিরিক্ত শক্তি নিয়োজনের আকাঙ্খা করেনি। আবার মুঘল রাজত্বের শেষদিকে, বিশেষতঃ ঔরঙ্গজেবের সময় ধর্মীয় আগ্রাসনের আড়ালে শুধু অত্যাচার নির্ভর প্রশাসনকে শায়েস্তা করার জন্য মারাঠা ও রাজপুত বাহিনীর জয় এসেছিল একই কারনে – ধর্মীয় আদর্শ রক্ষার তাগিদে। পরবর্তী সময় ভিয়েতনাম যুদ্ধ আমেরিকার মত সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তিধর দেশ শুধু আদর্শহীণতার কারনে দেশপ্রেমিক শক্তির আদর্শের কাছে পরাজিত হয়। এসব ছাড়াও সাম্প্রতিককালে তালিবানদের ইসলামী (তাদের মত করে) আদর্শের কাছে আফগানিস্তানে আগ্রাসী শক্তির পরাজয় ঘটে। সুতরাং, ইউক্রেন যখন তাদের জাতীয় স্বাধীনতা রক্ষার তাগিদে যুদ্ধে নেমেছে, নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, যত সময় গড়াবে, রাশিয়ার জয় তত শক্ত ও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। হ্যাঁ, প্রশ্ন উঠতে পারে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে। এটা ঠিক যে, অন্যদেশে যারাই আগ্রাসন চালাতে গেছে, তাদেরই সেখানে সেই যুদ্ধে পরাজয় হয়েছে। অবশ্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নির্ণায়ক হয়েছে জাপানে দুটি পারমাণবিক বোমা বিষ্ফোরণ! রাশিয়া যদি এই যুদ্ধ জিততে চায় তবে তাকে প্রতিবেশী ইউক্রেনের উপর পারমাণবিক আঘাত হানতে হবে। এই মূহুর্তে পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহারের অনুকুল পরিস্থিতি না থাকায় পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার সম্ভব নয়।
ফিরে আসি ভারতের উপর চীনের আগ্রাসন প্রসঙ্গে। সেখানে মনে রাখতে হবে, ভারত ও চীন – দুই দেশই পরমাণু শক্তিধর এবং দুদেশের পারমাণবিক মিসাইল ক্ষেপণ ক্ষমতা এতটাই যে, অতি অল্প সময়ে দুটি দেশই একে অপরকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে। এইজন্যই দুটি দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে তাদের পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে না। ফলে, চীনের দিক থেকে ছোটখাটো অনুপ্রবেশের চেষ্টা ও সীমান্তে গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি দখলর চেষ্টা ছাড়া সরাসরি বড় ধরনের দখলদারি অনুপ্রবেশের সম্ভাবনা নেই। আবার উপমহাদেশ চীনের একাধিপত্য কায়মের প্রধান বাধা ভারত। সেজন্য চীন ভারতকে ব্যতিব্যস্ত রাখার জন্য অপ্রত্যক্ষ যুদ্ধের বিভিন্ন ফ্রন্ট খোলার চেষ্টা চালাচ্ছে। ভারতের স্বাধীনতা-উত্তর কিছু ভুল নীতি এবং গণতন্ত্রের নামে তার সুযোগের যথেচ্ছাচার দেশের জাতীয়তাবোধের মূলে কুঠারাঘাত করেছে। দেশের রাজনীতিকদের একাংশ ভারতে রাজনীতি করলেও অন্য দেশের সরাসরি লাভ হয় এমন কাজে লিপ্ত থেকে দেশের জাতীয়তাবাদ ও অখন্ডতার বিরুদ্ধে কাজ করছে। কাশ্মীরের হিন্দু-পন্ডিতদের গণহত্যার সময় সেখানে মূখ্যমন্ত্রী ছিলেন ফারুখ আবদুল্লা। তিনি সম্প্রতি সেখানে পাক-ই-স্তানের মদতপুষ্ট জেহাদীদের দ্বারা হিন্দু-পন্ডিতদের হত্যার বিষয়ে মন্তব্য করেছেন, কাশ্মীরিদের পূর্ণ ইন্সাফ না মেলা পর্যন্ত এই হত্যালীলা চলবে! কোন সুসভ্য দেশ দুরের কথা, তাঁর প্রিয় পাক-ই-স্তানে দাঁড়িয়ে তিনি যদি সেখানকার ধর্মীয় সংখ্যাগুরু মানুষদের হত্যা প্রসঙ্গে এমন মন্তব্য করতেন তবে, হয় তিনি তৎক্ষণাৎ জেলে যেতেন বা তার ভবলীলা সাঙ্গ করে দেওয়া হত। আশ্চর্য হল, এমন মন্তব্যের পর্যন্ত এই দেশে কোন বিরোধীতা হয় না। কিছু বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি একে সমর্থন করে আর সরকার গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে চুপ করে থাকে। এই ধরনের রাজনীতি ভারতের স্থায়ীত্বের পক্ষে এই মূহুর্তে সর্বাপেক্ষা বিপজ্জনক। রাজনৈতিক কারনে ধর্মকে সামনে রেখে আসাদউদ্দিন ওয়েসীর মত নেতা দেশের অখন্ডতার বিরুদ্ধাচরন করলে তা নিয়ে বিশেষ প্রতিবাদ হয় না! কম্যুনিস্ট রাজনীতিকরা এবং তাদের চিন্তাধারায় লালিত ও পুষ্ট কিছু সংবাদ-মাধ্যম যখন দেশের অখন্ডতাকে অস্বীকার করার চেষ্টা করেন, “ভারত তেরে টুকরে হোঙ্গে”র মত নাড়া লাগান, তাদের পযর্ন্ত কোন শাস্তি হয় না। এভাবে ভারতীয় জাতীয়তাবোধের শিকড়কে স্বাধীনতার পর থেকেই উপড়ে ফেলার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বেশীদিন এভাবে চললে এমন সময় একদিন আসবে যখন দেশের এক বড় অংশের মানুষ আর ভারতকে নিজের দেশ বলে মানবে না! চীনের নেতৃত্বে ও উপমহাদেশের অন্যান্য রাষ্ট্রের কিছু মানুষের মদতে ভারতের অভ্যন্তরে এমন বিচ্ছিন্নতার বাতাস লাগানোর কাজ পুরোদমে চলছে। এছাড়া, কিছু রাজনীতিক ভোটের স্বার্থে ভারতের অভ্যন্তরে বিচ্ছিন্নতাবাদী কাজে পরোক্ষ সমর্থন জোগাচ্ছে। এই বিচ্ছিন্নতাবাদের বীজ ভারতের খন্ডিত স্বাধীনতালাভের সময়েই প্রোথিত হয়েছিল। ধর্মের ভিত্তিতে ত্রিখন্ডিত হয়ে দুটি খন্ডে ধর্মের ভিত্তিতে শাসনব্যবস্থা কায়েম হলেও ভারতে সংখ্যাগুরু মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগ গুরুত্ব পেল না। বরং যে ধর্মের মানুষদের কারনে দেশ ত্রিখন্ডিত হল, সেই ধর্মের মানুষদের ধর্মাচরণের বিশেষ সুবিধাসহ “ধর্মীয় সংখ্যালঘু”র অধিকার ভারতে স্বীকৃত হল! এখানেই স্বাধীন ভারতে বিচ্ছিন্নতার বীজ বপন করা হল। কোন দেশ তার জাতীয়তাবাদ ও জাতীয়তাবোধ ছাড়া বাঁচতে পারে না। যখন ভারতের জাতীয়তাবোধের উপর আঘাত আসে তখনই কম্যুনিস্টসহ বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায় ও কিছু রাজনীতিক তাতে বাতাস দেয়! ভারতে যে কোন কাজের জন্য যোগ্যতার প্রয়োজন হলেও রাজনৈতিক নেতা হতে এবং ভোট রাজনীতিতে টিঁকে থাকতে কোন যোগ্যতা লাগে না। এর জন্যই দেশের রাজনীতিতে এত অসততার আধিক্য।
একটি কথা ভারতের রাজনীতিবিদদের মাথায় আসে না – যদি তাদের মদতে বিদেশী শক্তির হাতে দেশের একটি অংশের ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয়, তবে সেই বিদেশী শক্তি প্রথম সুযোগেই ভারতীয় রাজনীতিকদের নিকেশ করবে – এটাই স্বাভাবিক। যে কোন রাষ্ট্রের স্থায়ীত্বের ভিত্তি তার জাতীয়তাবাদ এবং জনসাধারণের জাতীয়তাবোধ। এমনকি তথাকথিত কম্যুনিস্ট চীনের ক্ষেত্রেও একথা প্রযোজ্য। ইসলামী মানুষদের সংখ্যাধিক্যের দেশ ইন্দোনেশিয়া তাদের জাতীয়তাবোধের জন্য জাতীয় বীর হিসেবে শ্রীরাম ও অর্জুনকে বেছে নিয়েছে – সে দেশের বিভিন্ন স্ট্যাচু ও সংস্কৃতিতে তার ছাপ দেখেছি। দেশের অখন্ডতা ও সুরক্ষার প্রধান হাতিয়ার এই জাতীয়তাবোধকেই বিভিন্ন পদ্ধতিতে ভারতীয়দের দ্বারাই আঘাত করা হচ্ছে গণতান্ত্রিক অধিকারের নামে! এটি গভীর দুরভিসন্ধিমূলক পদক্ষেপ। দেশের সরকার যদি এসব দ্রুত বন্ধ না করে তা’হলে অচিরেই তা আয়ত্তের বাইরে চলে যাবে।
এবার আসি ভারতের অন্য প্রতিবেশীদের থেকে ক্ষতির সম্ভাবনায়। প্রথমে আসে পাক-ই-স্তানের নাম। খন্ডিত স্বাধীনতা অর্জনের প্রথম দিন থেকেই পাকিস্তানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য ভারতের উপর আগ্রাসন চালানো। তার সেই চেষ্টা পরপর তিনবার ব্যর্থ হলেও পাক-ই-স্তানের সেনাবাহিনীর মদতপুষ্ট রাজনৈতিক নেতারা ভারতের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক জিহাদকে ধর্মের মোড়কে এমন জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন যে এখন সর্বদা ভারতের সক্রিয় বিরোধীতা না করলে তাদের অস্তিত্বই বিপন্ন হবে। এজন্য প্রাক-স্বাধীনতা পর্যায়ে গান্ধী-নেহরু জুটির দায় থাকলেও স্বাধীনতা পরবর্তীকালে নেহরুর আগবাড়িয়ে নেহরু-লিয়াকত চুক্তির খেসারত আজও ভারতকে দিতে হচ্ছে। আজ কাশ্মীরকে অশান্ত করার চেষ্টার মূল কান্ডারী পাক-ই-স্তান ও কাশ্মীরের কিছু ইসলামী-ভারতীয় নাগরিক – যারা পাক-ই-স্তানপন্থী ইসলামী রাষ্ট্র হিসেবে কাশ্মীরকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা চালিয়ে গেছে। বিশেষতঃ কাশ্মীরের দু তিনটি ইসলামী রাজনৈতিক পরিবার প্রথম থেকেই ভারতের জাতীয়তা-বিরোধী আন্দোলনে কাশ্মীরি ইসলামীদের শামিল করার চেষ্টা চালিয়ে গেছে – এখনো তা চালানোর সুযোগ খুঁজছে। শক্ত হাতে এই গোষ্ঠীর মোকাবিলা করলে এবং পাক-ই-স্তান অধিকৃত কাশ্মীরের মুক্তির দাবীর সক্রিয় সমর্থন করলে ভারত অদুর ভবিষ্যতে পাক-ই-স্তানের দিক থেকে ক্ষতির আশঙ্কাকে প্রশমিত করতে পারবে।
বাংলাদেশে কিছু ইসলামী জিহাদী এবং শ্রীলঙ্কার একাংশ মানুষ চীনের প্ররোচনায় পা দিয়ে ভারতের সক্রিয় বিরোধীতার চেষ্টা করলেও এই দুটি দেশের সরকার তাদের অস্তিত্ব বিপন্ন করে সরাসরি ভারতের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ করার সাহস করবে না। ভূটান বা নেপাল – দুই স্থলবেষ্টিত প্রতিবেশী যতই প্রলোভন থাকুক, ভারতের সরাসরি বিরুদ্ধাচরণের ধৃষ্টতা দেখাতে পারবে না।
সুতরাং, একমাত্র পাক-ই-স্তান, যে একটি পরমাণু অস্ত্র সম্বৃদ্ধ দেশ, ভারতের বিরুদ্ধে তার বিচ্ছিন্নতাবাদী ও আতঙ্কবাদী কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে। সে চেষ্টায় ভারতের অভ্যন্তর থেকে খোলাখুলি বা গোপনে যেসব মদত দেওয়া হচ্ছে, তার উৎসগুলি প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক পদক্ষপে বন্ধ করলেই পাক-ই-স্তানের ভারত-বিরোধীতার বিষদাঁত ভেঙ্গেদওয়া সম্ভব হবে।
পরিশেষে বলি, পাক-ই-স্তান পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র হলেও তার দিক থেকে ভারতের উপর পারমাণবিক আঘাত করার সম্ভাবনা নেই। পাক-ই-স্তান যত সময় নিয়ে ভারতের চার বা পাঁচটি শহরের উপর পারমাণবিক বোমার আঘাত হানতে পারে, তার থেকে কমসময়ে ভারতের পরমাণু বোমার আঘাতে পাক-ই-স্তান দেশটাই একটি তেজস্ক্রিয় জোনে পরিণত হবে – যখন পৃথিবী বলবে “এখানে পাক-ই-স্তান বলে একটি দেশ ছিল” কাজেই পাক-ই-স্তানের দিক থেকে ভারতে পরমাণু আক্রমণের সম্ভাবনা নেই। তবে পাক-ই-স্তানের পরমাণু অস্ত্র থাকাটা তাদের একটাই স্বস্তি দেবে যে তারা ভারতসহ অন্য কোন দেশের পারমাণবিক আক্রমণের শিকার হবে না! ভারতে খুচরো নাশকতামূলক কাজকর্মে মদত দেওয়া বন্ধ করার জন্য ভারতের সরকারের তরফে কড়া দাওয়াইয়ের প্রয়োজন। গণতান্ত্রিক অশান্তি ও অরাজকতা নয়, রাজনীতির অলঙ্ঘনীয় নীতি হোক, জাতীয়তাবাদ ও জাতীয়তাবোধ – যাকে সারা পৃথিবীর অন্য সব দেশ মাণ্যতা দেয়।
ভারতে বিদেশী আক্রমণের আশঙ্কা আদৌ আছে কি
