কিছুদিন আগে পশ্চিমবঙ্গের ‘সুপ্রিমো’, মাননীয়া মমতা ব্যানার্জী তাঁর পশ্চিম বর্ধমানের সভা থেকে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে জিহাদের ডাক দিয়েছেন! এই জিহাদ তিনি শুরু করবেন তাঁর দলের ২১শে জুলাইয়ের সমাবেশের সময় থেকে! বাংলা সংবাদ-মাধ্যমগুলি এই খবর সবিস্তারে, কেউ কেউ আবার উল্লাসপূর্বক, প্রচার করেছে। “জিহাদ” কথার উৎপত্তি এবং তার অর্থ জানা প্রয়োজন। “জিহাদ”(jihad) একটি আরবিক শব্দ যার আক্ষরিক অর্থ হল – সংগ্রাম – অবশ্যই শব্দটি প্রশংসাসূচক! এটির ব্যবহার বিশেষতঃ আরবী দুনিয়া ও সেই সংস্কৃতির অনুসারী জায়গায় এবং এর প্রচলন ইসলামী সমাজে সীমাবদ্ধ। ক্লাসিক্যাল ইসলামী আইন (ummah) মোতাবেক এটি কোন ধর্মান্তরকরন (ইসলাম ধর্মে) বা ইসলামী সমাজে আদর্শগত উন্নতির কারনে অ-ইসলামীদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম। সুফী তত্ত্ব অনুসারে “জিহাদ” কথাটা আধ্যাত্মিক ও আদর্শগতভাবে ইসলামীদের উন্নতির সোপান। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ইসলামী উগ্রপন্থী এবং ইসলামী সন্ত্রাসবাদীদের মানবতা বিরোধী কার্যকলাপকে তারা এবং তাদের সমর্থকরা “জিহাদ” বলে অভিহিত করছে। প্রাথমিকভাবে এদের নাশকতামূলক কাজকর্ম এবং পুরুষতান্ত্রিক এক মধ্যযুগীয় বর্বর শাসনব্যবস্থা কায়েম করার সাম্রাজ্যবাদী নির্মমতাকে ইসলাম ধর্মের মোড়কে মাণ্যতা দেওয়ার (জায়েজ) পদ্ধতিকেই এরা “জিহাদ” বলছে – অর্থাৎ, মধ্যযুগীয় বর্বর পুরুষতান্ত্রিক শোষণ ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠিত করাকেই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে “জিহাদ” বলা হয়! যদিও কোরানে “জিহাদ” সামরিক অর্থ ছাড়াই একাধিকবার ব্যবহৃত হয়েছে; কোরানে – আল জিহাদ ফি সাবিল আল্লা, অর্থাৎ, আল্লার নির্দেশিত পথে থাকবার প্রচেষ্টা – একটি আত্মপরিশ্রমের পথ। তার জন্য ইসলামী ধর্মগুরুগণ কয়েকটি বিশেষ খুঁটিনাটিসহ নিয়ম জারি করেন। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে “জিহাদ” তার jurisprudence এর প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে। কিছু ইসলামী ধর্মগুরু জিহাদের হিংসাত্মক আগ্রাসী অর্থ বানিয়ে তার ক্লাসিক্যাল ব্যাখ্যাকে অর্থহীণ করে তুলেছে। সঙ্গে অবশ্যই অ-ইসলামীদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী ও উগ্রপন্থীদের বিভিন্ন নাশকতা, হত্যা ইত্যাদি ঘৃণ্য কাজকে ধর্মীয় অনুমোদনের চেষ্টা করা হচ্ছে!
ভারতের ইসলামী সমাজের মধ্যে এই আধুনিক “জিহাদ”এর ব্যাপারে সাধারণভাবে দুই ধরনের বিভাজন লক্ষ্য করা যায়। একদল সংখ্যাগুরু মানুষদের “কাফের” মনে করে তাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক সামরিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক জিহাদে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে বা আড়ালে থেকে এই কাজে অংশগ্রহণকারীদের সাহায্য করে। আবার আরেকদল ইসলামী একাজে অংশগ্রহণ না করলেও তার বিরোধীতা না করে নিষ্ক্রিয় থাকে। ধর্মের দোহাই দিয়ে সংখ্যাগুরু হিন্দুদের উপর অত্যাচার, ধর্ষণ ইত্যাদি ছাড়াও বিভিন্ন নাশকতায় লিপ্ত থাকা উগ্র ধর্মীয় সমাজবিরোধীরা যেমন শুধু ধর্মীয় কারনে হিন্দুদের সঙ্গে শত্রুতা করে, তেমনই ভারতের অখন্ডতার বিরোধীতা করে পাকিস্তানের প্রশংসা করে এবং অনেকে নাশকতার কাজে পাকিস্তানে তালিম নিয়ে আসে। অর্থাৎ এই সামরিক “জিহাদ” প্রকৃতপক্ষে ভারতবিরোধী এবং পাকিস্তান sponsored সন্ত্রাস।
ভারতের অভ্যন্তরে এই সন্ত্রাসের রাজনৈতিক ও নৈতিক সমর্থনের অভাব কখনো হয়নি। প্রথমেই হিন্দু, মুসলমান নির্বিশেষে, ভারতের কম্যুনিস্টদের কথাই ধরা যাক। এরা “ধর্মনিরপেক্ষতা” নামের একপ্রকার সোনার পাথরবাটির মত হিন্দুধর্মের যে কোন ধর্মীয় ক্রিয়াকান্ডের বিরোধীতা করে এবং একই সঙ্গে জিহাদী ও কট্টরপন্থী ইসলামীদের স্বাভাবিক মিত্র হিসেবে কাজ করে। তারা অদ্ভুত কুযুক্তি দেখিয়ে সশস্ত্র হিন্দু-বিরোধীতার জিহাদকে সমর্থন করে! যে কোন লেখা, বক্তব্য বা চলচ্চিত্রে হিন্দুদের উপর অত্যাচারের কথা থাকলেই তারা তার বিরোধীতা করে। এমনকি তিস্তা জাভেদ শীতলবাদের মত কোন ইসলামীর ধর্মীয় পরিচয় গোপন রেখে তাকে হিন্দু সাজিয়ে তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের বিরোধীতা করে! এরা ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার বিরোধীতা করলেও পাকিস্তান গঠনকে সক্রিয় সমর্থন জানায়। একই সঙ্গে তারা বাংলা বিভাজনের বিরোধীতা করে সম্পূর্ণ বাংলা ও বতর্মান অসম, বর্তমান ত্রিপুরার কিয়দংশকে পূর্বপাকিস্তানে অন্তর্ভূক্তির দাবী জানায়। এভাবেই কম্যুনিস্টদের জিহাদী রূপ দেখতে জনসাধারন অভ্যস্ত। কিন্তু এই মূহুর্তে দেশের কিছু বিরোধী রাজনৈতিক দল ক্ষয়িষ্ণু শক্তি কম্যুনিস্টদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জঙ্গী, জিহাদী কার্যকলাপে মদত দিচ্ছে কেন তা বিশ্লেষণ করার পর বিভিন্ন দল, বিশেষতঃ দলনেতা বা নেত্রীর ব্যক্তিস্বার্থ প্রধান কারন বলে মনে করা হচ্ছে। প্রথমেই দেশের প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেসের কথা বলতে গেলে বলতে হয় যে এই দলের শোচনীয় রাজনৈতিক অবস্থার জন্য দায়ী এর অযোগ্য পারিবারিক নেতৃত্ব – যা আবার পার্টটাইম রাজনীতিতে অভ্যস্ত। সোনিয়া গান্ধী একে বিদেশীনী তায় ক্যাথলিক খ্রিষ্টান হওয়ার সুবাদে তাঁর পক্ষে হিন্দুত্বের অবক্ষয় কামনা করা স্বাভাবিক। সেকারনে, দেশের সংখ্যালঘু নামধারী ২৮% ইসলামীদের তোষণ করার নীতি নিয়ে তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মোকাবিলায় নেমেছেন। আবার নিজের ও ছেলের অত্যধিক ক্ষমতার লোভে হিন্দুবিরোধী জোটের ঘোঁট করে উদ্ধব ঠাকরে হিন্দুত্ব-বিরোধী রাজনীতির খপ্পরে পড়ে রাজনৈতিক আত্মহত্যা করতে বাধ্য হলেন। এসবই মাত্রাতিরিক্ত লালসার কারনে ঘটেছে। আরেকটি কথা, পশ্চিমবঙ্গের তথা সমগ্র ভারতের সংবাদ-মাধ্যমগুলি সেই জওহরলাল নেহরুর সময় থেকেই কম্যুনিস্টদের নিয়ন্ত্রণে আসতে থাকে। পরবর্তীকালে এই নিয়ন্ত্রণ আরো বিস্তৃত হয়েছে। এখন ত এমন অবস্থা যে, কম্যুনিস্ট এ্যাজেন্ডা মোতাবেক দেশবিরোধী এবং দেশের সরকার ও বিজেপি বিরোধী কথা বললেই media exposure পাওয়া যায়; অন্যথায় সংবাদ-মাধ্যমের গুরুত্ব পাওয়া যায় না! সব রাজনীতিকরাই সংবাদ-মাধ্যমে ভেসে থাকাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেন। সুতরাং….।
এই প্রেক্ষাপটে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দলের সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জীর জিহাদ ঘোষণার কারন বিশ্লেষণ করতে হবে। মমতাদেবীর modus operandi দেখলে তাঁর দুটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ধরা পড়ে। প্রথমটি হল, মাত্রাতিরিক্ত উচ্চাভিলাষী। অবশ্য রাজনীতিতে উচ্চাভিলাষ না থাকলে টিঁকে থাকা যায় না। দ্বিতীয়টি হল, অস্থিরমতি। তিনি কোন কাজ বেশীদিন ধরে একই গতিতে এবং একই পন্থায় করেছেন বলে জানা নেই। তাঁর কাজের একটি বড় বৈশিষ্ট্য হল, অত্যন্ত ক্ষুরধার রাজনৈতিক বুদ্ধির প্রয়োগে নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরী করে নিজের কাজ হাসিল করা! এ ব্যাপারে আমার ধারনা যে, এই মূহুর্তে মমতাদেবীই রাজনীতিকদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে। তাঁর মত একজন বরিষ্ট রাজনীতিক যে, “জিহাদী” connotation না জেনে বা আবেগের বশে বলে ফেলেছেন, তা মনে করার কোন কারন নেই। বরঞ্চ, এটাই মনে হওয়া স্বাভাবিক যে তিনি জেনে,বুঝেই এ কাজটি করেছেন।
বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিষয়টিকে বিশ্লেষণ করা দরকার। সাম্প্রতিককালে দেশবিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি এবং তাদের সমর্থকরাই কোন স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের (এই মূহুর্তে দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল) বিরুদ্ধে “জিহাদ” ঘোষণা করতে পারে। এমনকি মমতাদেবী জানিয়ে দিয়েছেন যে, তাঁর দল শহীদ দিবস পালনের দিন, সামনের ২১শে জুলাই থেকেই এই “জিহাদ” শুরু হবে! অতীতে আমরা দেখেছি যে, কোন সংগঠন যখন “জিহাদ” ঘোষণা করে তখন বিধর্মী মানুষদের, যাদের বিরুদ্ধে “জিহাদ” ঘোষণা করা হয়েছে, তাদের হিংসাত্মক পরিবেশের মুখোমুখি হতে হয় – এমনকি খুণ,লুঠপাট, ধর্ষণ ইত্যাদিকে ইসলামী মৌলবাদের মোড়কে ধর্মীয় স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। জনাব এম এ খানের লেখা “জিহাদ – জবরদস্তিমূলক ধর্মান্তরকরণ, সাম্রাজ্যবাদ ও দাসত্বের উত্তরাধিকার” (Islamic Jihad A Legacy of Forced Conversion, Imperialism, and Slavery – by M. A. Khan) বইটি পড়ে বর্তমান সময়ে “জিহাদ” কথার আসল অর্থ বোঝা যায়।
এমতাবস্থায় শ্রীমতি ব্যানার্জীর ২১শে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণার তাৎপর্য অনুধাবন করতে হবে। পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল ও কম্যুনিস্ট দলের ইসলামী তোষণের নামে “জিহাদী” তোষণ হয়ে গেলে তা পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে সকলের স্থায়ীত্বে রীতিমত প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দেবে। আগ্রাসী ধর্মান্তরকরণ ও মধ্যযুগীয় সাম্রাজ্যবাদ বিস্তারের জন্য ইসলামকে কাজে লাগালে অন্য ধর্মের মানুষদের ত বটেই, ইসলামী মানুষদেরও বিপদ ডেকে আনবে। এর সাম্প্রতিকতম উদাহরণ হল আফগানিস্তান। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে মৌলবাদী শক্তিরা এই জিহাদের আহ্বানকে তাদের জবরদস্তি বিস্তারবাদী ধর্মান্তরকরণ ও সাম্রাজ্যবাদী মানসিকতার সফল প্রয়োগের সুযোগ করে দেবে। কাশ্মীরে আগে কিছু ইসলামী রাজনীতিক জিহাদের ডাক দিয়ে ভারত তথা কাশ্মীরী হিন্দুদের ক্ষতি ত করেইছেন, অধিকন্তু কাশ্মীরী মুসলমানদের একাংশকে বিপথগামী করেছেন এবং সেইসঙ্গে সমগ্র কাশ্মীরের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতি রুদ্ধ করেছেন। সেখানে কয়েকটি রাজনৈতিক পরিবার ও তাদের ঘনিষ্ঠ অনুচরদের বিপুল সম্পত্তিবৃদ্ধি ছাড়া সাধারণ মানুষের অবস্থা দিন কে দিন ক্রমশঃ খারাপ হয়েছে। ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টি করে ভারতীয়দের মধ্যে ঘৃণার পরিবেশ তৈরী করে এই রাজনীতিকরা দেশের চরম ক্ষতি করার সাথে সাথে নিজেদের আখের গুছিয়েছেন।
আশার কথা এটুকুই যে, ইসলামী মানুষজনের একাংশ এদেশে এবং বাংলাদেশে এই ধর্মীয় জিহাদের স্বরূপ প্রকাশ করে তার যথার্থ বিরোধীতায় নেমেছে। কিন্তু ভারতের কম্যুনিস্ট সহ বেশ কিছু রাজনীতিক সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নামে হিন্দুত্ব ও ভারতবিরোধী শক্তিকে শুধু তোল্লা দিচ্ছে তা ই নয়, তারা একাজ করতে গিয়ে কখন যে ভারতের অখন্ডতার বিরোধীতা করছে – ভারতের জাতীয়তাবাদের বিরোধীতা করছে, তা তারা নিজেরাও বুঝতে পারছে না। শ্রীমতি ব্যানার্জী যেমন অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরোধীতা করছেন অস্থায়ী ট্রেণিং কাম চাকরীর কারনে, তেমন তিনি পশ্চিমবঙ্গে সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে বিনা ট্রেণিংয়ে মাসিক ছ হাজার টাকা মাইনের “সিভিক পুলিশ” নিয়োগের কৃতিত্ব নিচ্ছেন! সবকিছুতেই বিজেপি বিরোধীতা করতে গিয়ে কখন যে জিহাদী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাতে তামাক খেয়ে তা দেশবিরোধীতায় পরিণত হবে সেটা বোঝা যাবে না। আরেকটি কথা – পৃথিবীর সব রাষ্ট্রের স্থায়ীত্বের প্রথম ও প্রধান শর্ত হল জাতীয়তাবাদ। আশ্চর্যজনকভাবে ভারতের যে রাজনীতিকরা ভারতের জাতীয়তাবাদের বিরোধীতা করছে, তারা কিন্তু চীন বা রাশিয়ার জাতীয়তাবাদের নিন্দা করছে না। এমনকি ইসলামী ধর্মনিরপেক্ষতার এইসব সমর্থকেরা চীন যখন নিজের দেশে ইসলামী ধর্মীয় অনুশাসন বন্ধ করার জন্য “চাইনিজ বাম” প্রয়োগ করে, তখন তার নিন্দা করে না। অর্থাৎ এদের নীতি দেশ ভিত্তিক! ভারতের জাতীয়তাবাদের ও জাতীয়তাবোধের বিরোধীতা এবং পাকিস্তানের স্বার্থ সহায়ক কাজে এদের আগ্রহ। কম্যুনিস্টদের মেধাবী ছাত্রী, মমতা ব্যানার্জী যে রাজনীতিতে তাদের পথই অবলম্বন করবেন, তাতে সন্দেহ নেই।
ভারতের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি ভিন্ন, কাশ্মীর অপেক্ষা কিছুটা জটিলও বটে। বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘ সীমান্ত এবং ‘অনুপ্রবেশ’ সমস্যা আছেই। তাছাড়া, পশ্চিমবঙ্গে ৩০% ইসলামী ও প্রায় ১৫% হিন্দু, ইসলামী ধর্মনিরপেক্ষতার নামে “জিহাদ”পন্থী হওয়ায় মমতা ব্যানার্জীর এই ৪৫% টার্গেট ভোটার। তিনি ভোট প্রক্রিয়ার সময় প্রশাসনে থাকলে এই ৪৫% ভোট যদি তাঁর দিকে যায় তবে তাকে ভোটে হারানো অসম্ভব। কিন্তু তাঁর টার্গেট ভোটারদের মধ্যে অভিজ্ঞতার নিরিখে বিভাজন হলে তখন পরিস্থিতি অন্য রকম হতে পারে। সুতরাং অভিজ্ঞ রাজনীতিক শ্রীমতী ব্যানার্জী সচেতনভাবেই ইসলামী আবেগকে ব্যবহার করার প্রয়াসে “জিহাদ”কে তোল্লা দেওয়া হচ্ছে। এতে যেমন হিন্দুদের ক্ষতি হচ্ছে, তেমন সাম্প্রদায়িক উত্তেজনায় ইসলামীদেরও ক্ষতি হচ্ছে। লাভবান হচ্ছে শুধু জিহাদী উগ্রপন্থা ও কিছু রাজনীতিক। একজন বরিষ্ট রাজনীতিক ও পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা ব্যানার্জীর এমন “জিহাদ” শুরু করার আহ্বানে রাজ্যে ইসলামী উগ্রপন্থীরা যে মদত পাবে তা বলাই বাহুল্য। এই ধর্মীয় জিহাদ যত তীব্র হবে ততই বিজেপি বা কোন রাজনৈতিক দল নয়, ভারত এবং বিশেষতঃ হিন্দুদের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নতাবাদ মাথাচাড়া দেবার সম্ভাবনা দেখা দেবে। ভারতের শত্রু রাষ্ট্ররা স্বাভাবিকভাবেই সে পরিস্থিতির সুযোগ নেবে। কাজেই এভাবে প্যান্ডোরার বাক্স খুলে গেলে তা কোন গোষ্ঠীসংঘর্ষ বা এক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্য রাজনৈতিক দলের সংঘর্ষ নয়, তা ভারত ও ভারতীয়ত্বের সঙ্গে আরবী ধর্মীয় আগ্রাসনের সংগ্রাম শুরু করবে। তখন কিন্তু মমতা ব্যানার্জী বা তাঁর তৃণমূল দলের নিয়ন্ত্রণে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে না।
মমতা ব্যানার্জীর জিহাদ কার বিরুদ্ধে
