লাভ-জিহাদের মূল উদ্দেশ‍্য

সোশাল মিডিয়ায় বদরুদ্দিন আজমল নামের একজনের বক্তব‍্য দেওয়া হচ্ছে – ইসলামী ছেলেরা ২২ ও মেয়েরা ১৮ বছর বয়সে বিয়ে করে বলে নাকি তাদের বাচ্চার সংখ‍্যা বেশী! এই লোকটি তার অন্ধ হিন্দু-বিদ্বেষের পরিচয় দিয়ে বলে, হিন্দুরা ৪০ বছরের আগে বিয়ে করে না আর তার আগে তিন, চারটি করে অবৈধ স্ত্রী রাখ – সেখানে মজা লোটে আর বাচ্চা হয় না! ৪০ বছরের পর কোথাও ফেঁসে গিয়ে যখন তারা বিয়ে করে তখন নাকি তাদের বাচ্চা দেওয়ার ক্ষমতা থাকে না! সেজন‍্য নাকি হিন্দুদের বাচ্চার সংখ‍্যা কম!
এমন একজন হিন্দু-বিদ্বেষী উন্মাদকে যদি প্রশ্ন করা যায়, একজন ইসলামী একসঙ্গে কতজন স্ত্রী রাখতে পারেন? তার উত্তর সে দিতে পারবে না। হাদিসে আছে – চারটি! অবশ‍্য ওসামা-বিন-লাদেন বা মোল্লা ওমরের কটি স্ত্রী ছিল তা জানলে পরে, তারা ইসলামকে কতটা মেনেছিলেন, তার ব‍্যাখ‍্যা কোন জিহাদী মোল্লা-মৌলবীর পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। আসলে মৌলবাদী জিহাদীরা ইসলামের আড়ালে তাদের বিস্তারধর্মী কার্যসিদ্ধি করার উদ্দেশ‍্যে মসজিদ, মাদ্রাসাগুলিকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা শুরু করে প্রায় ১০০ বছর আগে থেকে – খিলাফৎ আন্দোলন ব‍্যর্থ হওয়ার পর থেকে। এই সময় থেকে মসজিদের ইমাম, মোয়াজ্জেম এবং মোল্লা, মৌলবীদের আর্থিক প্রলোভন দেখানো শুরু হয়। তখন থেকে বিশেষভাবে ভারতের হিন্দু নারীরা তাদের টার্গেট ভিক্টিম!
২০০৯ – ১১ সালে এভাবে অমুসলিম মেয়েদের প্রেমের ফাঁদে জড়িয়ে মুসলিম ছেলেরা তাদের সঙ্গে সম্ভোগ-ক্রিয়া করে তাদের ‘নিকাহ’ করে ইসলামে ধর্মান্তরিত করার কাজ ব‍্যাপকভাবে শুরু করে। ধর্মীয় সংগঠনগুলি এ কাজে যুক্ত জিহাদী এই ছেলেদের বিভিন্ন ভাবে সাহায‍্য করে বলে অভিযোগ। এতে ইসলামী মৌলবাদীদের একাধিক উদ্দেশ‍্য সার্থক হয়। প্রথমতঃ, এই অমুসলিম মহিলারা ইসলামের ভাষায় “শষ‍্যক্ষেত্র” হিসাবে ইসলামী সন্তান জন্মের জন‍্য ব‍্যবহৃত হয়! এর ফলে ইসলামী জনসংখ্যার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অমুসলিম জনসংখ‍্যা বৃদ্ধির সম্ভাবনা কমবে। যার অবিসংবাদী ফল হল, ধীরে ধীরে একটি দার-উল-হার্ব রাষ্ট্র একদিন দার-উল-ইসলামে পরিণত হবে। এই কাজকে শুধু যে ইসলামী পুরুষদের ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী অবশ‍্য পালনীয় করার কথা বলে, তাই নয়, এ কাজের জন‍্য ধর্মীয় সংগঠন ও জিহাদী সংগঠন থেকে অর্থ সাহায‍্য পর্যন্ত করা হয় – সাম্প্রতিক শ্রদ্ধা ওয়ালকার মার্ডার কেসের অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি অনুসারে এই তথ‍্য সামনে এসেছে। একে পশ্চিমী দুনিয়া প্রথম “লাভ জিহাদ” আখ‍্যা দেয়।
গত ২০১৪ সাল থেকে ভারতে এই লাভ জিহাদের ঘটনার পরিসংখ্যান সামনে আসতে শুরু করে। জিহাদী ও কম‍্যুনিস্ট মানসিকতার সংবাদ-মাধ‍্যম ও তাদের বেতনভূক তথাকথিত “বুদ্ধিজীবী”রা রে রে করে নেমে পড়ে একে লাভ জিহাদ না বলে মহিলাদের উপর অত‍্যাচারের “বিচ্ছিন্ন” ঘটনা বলে চালাতে চায়। কয়েকটি ঘটনা-প্রবাহ ও পরিসংখ্যান দিলেই বোঝা যাবে, এইসব সংবাদ-মাধ‍্যম পেইড নিউজ ও পেইড বুদ্ধিজীবী দ্বারা দুর্বল মিথ‍্যাকে সত‍্যি বলে চালাতে চায় – অনেকটা গোয়েবেলসীয় কায়দায়! স্বাধীনতার সময়ে পাকিস্তানের জনসংখ‍্যার ২৪% ছিল হিন্দু। এখন পাকিস্তানে হিন্দু ২% মাত্র! পূর্ব পাকিস্থানে ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার সময়ে ৩৩% হিন্দু থাকলেও এখন সেই সংখ‍্যা এসে ৯% এ দাঁড়িয়েছে! অর্থাৎ দুই দেশ, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে হিন্দুর সংখ‍্যা ক্রমশঃ বিলীয়মান হওয়ার পথে। হিন্দুরা দুটি দেশেই মার্জিনালাইজড্।
গান্ধীজীর সমর্থনে জওহরলাল ও অন‍্যান‍্য গান্ধীবাদী নেতাদের আত্মঘাতী নীতিতে স্বাধীনতার সময় ভারতে সর্ব ধর্ম সমন্বয় এবং পরবর্তীতে জওহর কন‍্যা ইন্দিরা গান্ধীর চাতুরীতে ভারত হল ধর্মনিরপেক্ষ (!) রাষ্ট্র। এটি যে “ইসলামী ধর্মনিরপেক্ষতা”, সেকথা আগে অনেক লেখায় তথ‍্য সহকারে উপস্থাপিত হয়েছে। সে কারনে ভারতে ইসলামী জনসংখ্যা ১০% থেকে বেড়ে ১৪% হয়েছে। ইসলামী জনসংখ‍্যা বৃদ্ধির হার ১৯৯১-২০০১ সালে ৩৬% হয়েছে! এখন তা নিঃসন্দেহে ৪০% অতিক্রম করেছে। এই পরিসংখ্যানের পরিপ্রেক্ষিতে লাভ জিহাদের বিচার-বিশ্লেষণ আবশ‍্যক।
লাভ জিহাদের ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি হিন্দু মেয়েদের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ইসলামী ছেলেদের জড়িত থাকার ঘটনাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব যে ধর্মীয় উন্মাদনার কারনে, সেটা তাদের অপরাধের ধরনেই বোঝা যায় – এই অপরাধের বিভৎসতা সভ‍্য সমাজের চিন্তার অতীত। ২০২০ সালে হলদিয়ার রমা দে (৪০) ও তার মেয়ে রিয়া দে (১৯) কে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় মুল অভিযুক্ত হয় শেখ সাদ্দাম নামের এক ইসলামী যুবক। মৃতদেহ দুটির পোষ্টমর্টেম রিপোর্টে জানা যায় মা ও মেয়ে দুজনেই গর্ভবতী ছিল! গ্রেপ্তারের পর সাদ্দামের স্বীকারোক্তি থেকে জানা যায়, মা ও মেয়ে দুজনেই তার দ্বারা গর্ভবতী হয়! এখানে একটি কথা বলা প্রয়োজন – হিন্দুদের মধ‍্যে নারীদের মা, স্ত্রী, মেয়ে বা বোন হিসেবে দেখা হয়। সেজন‍্য এই ধরনের অপরাধের রেকর্ড তাদের মধ‍্যে নেই। আবার হিন্দু রমনী মাত্রই “শষ‍্যক্ষেত্র” মনে করে শেখ সাদ্দাম মা ও মেয়ে দুজনের সঙ্গেই মিলিত হয়ে তাদের গর্ভবতী করে! একসময় ব‍্যপারটা জানাজানি হতে সে বাধ‍্য হয়ে নাকি বন্ধু মঞ্জুর আলমের সহযোগীতায় রমা ও রিয়াকে একসঙ্গে খুন করে।
সাম্প্রতিক কালে দিল্লীর শ্রদ্ধা ওয়ালকারের কথা ধরা যাক। তার লিভ পার্টনার আফতাব পুনাওয়ালা (পার্শী নয়, মুসলমান) শ্রদ্ধাকে খুন করার পর তার দেহ ৩৫টি টুকরো করে ছড়িয়ে দেয়! শ্রদ্ধার ২০২০ সালে লেখা একটি চিঠি থেকে জানা যায়, আফতাব নাকি শ্রদ্ধার উপর রেগে গেলে প্রায়শঃই তাকে মের টুকরো করার হুমকি দিত! অথচ, মুসলিম জাস্টিস ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রাফিউদ্দিন কুদরোলি এই ঘটনাকে লাভ জিহাদ মানতে অস্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে! Times of India ও বেশ কিছু জিহাদী মদতপুষ্ট সংবাদ-মাধ‍্যম সেই লাইনে প্রচার পর্যন্ত করছে! অবশ‍্য হুবলির হিন্দু জাগ্রুতি সমিতি এই লাভ জিহাদের অপরাধী আফতাব পুনাওয়ালার কঠিনতম শাস্তি দাবী করেছে। এর থেকে বোঝা যাচ্ছে, ধর্মীয় এবং অন‍্য গূঢ় কারনে এমন জঘণ‍্য অপরাধীদের আড়াল করার প্রবনতা আছে – যা সমাজকে অবধারিতভাবে নরকের দড়জায় নিয়ে যাবে।
এই দুটি অপরাধের প্রকৃতি অনুধাবন করলে বোঝা যায়, এগুলি সাধারণ শ্লীলতাহাণি করে খুণ নয়। পৃথিবীতে মানুষ দূরের কথা, কোন পশুও একসঙ্গে মা ও মেয়ে দুজনের সঙ্গে সম্ভোগে লিপ্ত হতে পারে না। শেখ সাদ্দামের পক্ষে সেটা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র ধর্মের আফিমে বিভোর থেকে সে বিধর্মী রমনীদের “শষ‍্যক্ষেত্র” হিসেবে ব‍্যবহার করে ইসলামী শিশুর জন্ম দেওয়ার কাজে ব‍্যবহার করেছে বলে! এখানে কোন ভালবাসার ব‍্যাপার নেই। আজে শুধু যৌণ লালসা চরিতার্থ করা এবং তা বিধর্মী রমণীদের প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রসূত ধর্ষণ হতে পারে মাত্র। বিধর্মীদের বিরুদ্ধে জিহাদের একটি অস্ত্র এই “লাভ জিহাদ”। শ্রদ্ধা হত‍্যাকান্ডও লাভ জিহাদের অন‍্যরকম বহিঃপ্রকাশ। কোন প্রেমিক তার প্রেমিকাকে খুণের হুমকি দিতে দিতে একসময় খুন করে তার দেহ ৩৫ টুকরো করে ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখতে পারে না! একমাত্র হৃদয়হীণ পাকা খুনী সম্ভোগের পর সঙ্গীকে এভাবে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে পারে। সেটাও সম্ভব শুধুমাত্র বিধর্মী শষ‍্যক্ষেত্রের উপর তীব্র ধর্মীয় ঘৃণা প্রসূত বিদ্বেষ থেকে।
এইসব লাভ জিহাদের উদ্দেশ‍্য ও কার্যপ্রণালীর ছক একটাই – ভারতে বিধর্মী, বিশেষতঃ হিন্দু, রমণীদের ছলে-বলে-কৌশলে ঘনিষ্ঠ হও। সুযোগ বুঝে তাদের গর্ভে ইসলামী ‘ফসল’ ফলাও – তারপর “শষ‍্যক্ষেত্র”কে ধর্মান্তরিত করে ইসলামে শামিল কর! এক্ষেত্রে কোন স্তরে কোন বাধা এলে তাদের খতম করে দাও! এই কাজের জন‍্য যদি জিহাদীকে মরতে হয় তবে বেহেস্তের বাহাত্তর হুরী (সুন্দরী স্বর্গ-বেশ‍্যা) সম্ভোগ কর! পুরোপুরি যৌন সম্ভোগের লোভ দেখিয়ে নিজেদের বিস্তারধর্মী কাজের প্রসারের মাধ‍্যমে ভারতকে দার-উল-হার্ব থেকে দার-উল-ইসলামে রূপান্তরিত করা।
অবাক করার মত যা, তা হল, এই কাজে ভারতের অমুসলিম কম‍্যুনিস্ট ও তথাকথিত “ইসলামী ধর্মনিরপেক্ষতার” ধারক ও বাহক কিছু মানুষ, সংবাদ-মাধ‍্যম তাৎক্ষণিক লাভের কড়ি গুনতে গিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব, ইতিহাস – সবকিছু নষ্ট করে দিচ্ছে। এভাবে চললে ভারতের অমুসলিম অধিবাসীদের অবস্থা কুর্দীস্থানের কুর্দ, ইয়াজিরীদের মত হবে। অতঃপর, তাদের সামনে বেছে নেওয়ার রাস্তা একটাই – হয় লাভ জিহাদীদের তাদের দেশে (পাকিস্তান বা বাংলাদেশ) পাঠাও অথবা নিজেদের অস্তিত্ব শেষ কর। এজন‍্যই মহম্মদ আলী জিন্নার অভিমত – মুসলমান একটি পৃথক জাতিসত্বা – তা হিন্দু, শিখ, খৃষ্টান সকলের থেকে পৃথক। তাই মুসলমানরা তাদের জন‍্য পৃথক রাষ্ট্র চায়। এমন সহজ, সত‍্যি কথাটা বুঝেও নিজেদের স্বার্থের জন‍্য গান্ধী-নেহরু তা মানতে চাননি। তাদের “হিন্দু-মুসলিম ভাই ভাই” এর নামে ভারতকে “ইসলামী ধর্মনিরপেক্ষতা”র দেশ করার খেসারৎ আজ ভারতের অমুমসলিম অধিবাসীদের দিতে হচ্ছে। এর সমাধান প্রয়োজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *